পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२ গ্রীক ও হিন্দু। বশবৰ্ত্তিতায়। মানবীয় নিয়ম মনুষ্যের স্বেচ্ছাসস্থত, অতএব উহ স্বাধীন ; কিন্তু স্বাধীন হইলেও, উহা প্রাকৃতিক নিয়মে অঙ্কশয়নশায়ী । সুতরাং যতক্ষণ মনুষ্যকৃত নিয়মের কার্য্য প্রকৃতি-অনুকূলে, ততক্ষণ উহা সাত্বিক এবং সুফলপ্রদ ; কিন্তু যখন আবার প্রকৃতি-প্রতিকূলে, তখনই উহা অসাত্ত্বিক এবং অফলপ্রদ হইয়া থাকে । ফলতঃ, মনুষ্য সেই বিশ্ব-পরিচালিকা মহাশক্তিরাশির মধ্যে, স্ফটিকত্বে পরিণত স্বতন্ত্র শক্তিখণ্ড স্বরূপ ; সুতরাং মহাশক্তি হইতে যেরূপ পৃথক্ হইয়াণ্ড পৃথক নহে, সেইরূপ আবার অপৃথক হইয়াও অপৃথক্ নহে। প্রাকৃতিক নিয়ম অদৃষ্ট নামেও আখ্যাত হইয়া থাকে। এই উভয়বিধ কৰ্ম্মস্থত্র বাহিয়া আমাদিগের জীবন-গতি । অতএব আমাদিগকে কাৰ্য্যক্ষেত্রে প্রবেশ করিয়া কার্য্যে প্রবৃত্ত হইতে হইলে, অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য এবং হেতুভূত সার্থকতালাভার্থে, সঙ্গে সঙ্গে এই দ্বিবিধ বিষয়ের অবধারণা কৰ্ত্তব্য। প্রথমে, প্রাকৃতিক নিয়ম কি রূপে সেই প্রবর্তিত কাৰ্য্যের উপকরণ ও উপায়সমূহের সন্ধুলান করিতেছে ; দ্বিতীয়ে, আমরা কিরূপ হইলে, এবং কিরূপে সেই উপকরণরাশি ও উপায়সমূহ ব্যবহার করিতে পারিলে, প্রকৃতি অনুকুল হওয়াতে, অমুষ্ঠানের সফলতা জন্য সার্থকতালাভে যথাসম্ভব সমর্থ হইতে পারি। যে কোন বিষয় হউক, অগ্রে তাহার প্রাকৃতিক তত্ত্ব অবধারণ এবং সেই তত্ত্ব গ্রহণ ও ভক্তিভাবে অবলম্বন ব্যতীত, বিষয়ের যদৃচ্ছ অনুষ্ঠান করিলে, মঙ্গলের সম্ভাবনা অতি অল্পই । এই অবধারণা অন্তে, স্বেচ্ছ এবং আত্ম-কৰ্ম্মশক্তিকে সাত্ত্বিক করিয়া সেই তত্ত্বের অনুসরণে কাৰ্য্য করিলে, পূৰ্ব্বকথিত চতুৰ্ব্বিধ ক্রমেরই স্বসিদ্ধি সাধন হইয়া থাকে ; এবং কাৰ্য্যকারকও তখন কাৰ্য্য-পূর্ণভানীত আনন্দে আনন্দ বান হইতে সমর্থ হয়েন।