আমার স্বামীর বড়াে ইচ্ছা ছিল, আমাকে বাইরে বের করবেন। একদিন আমি তাঁকে বললুম, বাইরেতে আমার দরকার কী?
তিনি বললেন, তােমাকে বাইরের দরকার থাকতে পারে।
আমি বললুম, এতদিন যদি তার চলে গিয়ে থাকে আজও চলবে, সে গলায় দড়ি দিয়ে মরবে না।
মরে তাে মরুক-না, সেজন্যে আমি ভাবছি নে— আমি আমার জন্যে ভাবছি।
সত্যি নাকি, তােমার আবার ভাবনা কিসের?
আমার স্বামী হাসিমুখে চুপ করে রইলেন। আমি তার ধরন জানি; তাই বললুম, না, অমন চুপ করে ফাকি দিয়ে গেলে চলবে না, এ কথাটা তােমার শেষ করে যেতে হবে।
তিনি বললেন, কথা কি মুখের কথাতেই শেষ হয়? সমস্ত জীবনে কত কথা শেষ হয় না।
না, তুমি হেঁয়ালি রাখাে, বলাে।
আমি চাই, বাইরের মধ্যে তুমি আমাকে পাও, আমি তােমাকে পাই। ঐখানে আমাদের দেনাপাওনা বাকি আছে।
কেন, ঘরের মধ্যে পাওয়ার কমতি হল কোথায়?
এখানে আমাকে দিয়ে তােমার চোখ-কান-মুখ সমস্ত মুড়ে রাখা হয়েছে— তুমি যে কাকে চাও তাও জান না, কাকে পেয়েছ তাও জান না।
খুব জানি গাে, খুব জানি।
মনে করছ জানি, কিন্তু জান কি না তাও জান না।
দেখাে, তােমার এই কথাগুলাে সইতে পারি না।
সেইজন্যেই তাে বলতে চাই নি।
তােমার চুপ করে থাকা আরাে সইতে পারি নে।
তাই তাে আমার ইচ্ছে, আমি কথাও কইব না, চুপও করব না— তুমি একবার বিশ্বের মাঝখানে এসে সমস্ত আপনি বুঝে নাও। এই ঘর-গড়া ফাঁকির মধ্যে কেবল মাত্র ঘরকন্নাটুকু করে যাওয়ার জন্যে তুমি হও নি, আমিও হই নি। সত্যের মধ্যে আমাদের পরিচয় যদি পাকা হয় তবেই আমাদের ভালােবাসা সার্থক হবে।
পরিচয় তােমার হয়তাে বাকি থাকতে পারে, কিন্তু আমার কিছুই বাকি নেই।
বেশ তাে, আমারই যদি বাকি থাকে সেটুকু পূরণ করেই দাও-না কেন।
এ কথা নানারকম আকারে বার বার উঠেছে। তিনি বলতেন, যে-পেটুক