পাতা:ঘর-পোড়া লোক (প্রথম অংশ) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঘর-পোড়া লােক।
৩৩

গুলি ঘর দেখিবার পর এক পার্শ্বের একটা নির্জ্জন গৃহের তালা খুলিলেন। সেই গৃহের ভিতর অপর দ্রব্য-সামগ্রী কিছুই ছিল না, কেবল গৃহের মধ্যে একখানি পালঙ্কের উপর একটী বিছানা আছে মাত্র।

 সেই বিছানার সন্নিকটে গিয়া যাহা দেখিলেন, তাহাতে সমস্ত লোকেই একবারে বিস্মিত হইয়া পড়িলেন। ইতিপূর্ব্বে দারোগা সাহেব যাহা স্বপ্নেও একবার মনে ভাবেন নাই, তিনি তাহা দেখিয়াই যেন হতবুদ্ধি হইয়া পড়িলেন। কিছুক্ষণের নিমিত্ত যেন তাঁহার সংজ্ঞাও বিলুপ্ত হইল। একটু পরেই দারোগা সাহেব কহিলেন, “কি মহাশয়। এ কি দেখিতেছি?”

 দারোগা সাহেবের কথা শুনিয়া আর কাহারও মুখে কোন কথা বাহির হইল না। পরস্পর পরস্পরের মুখের দিকে দেখিতে লাগিলেন। কেবল হেদায়েৎ সেই বিছানার সন্নিকটবর্ত্তী হইয়া কহিল, “মহাশয়! এই আমার কন্যা।” এই বলিয়া হেদায়েৎ তাহার কন্যার গাত্রে হস্তার্পণ করিয়া বার বার তাহাকে ডাকিতে লাগিল; কিন্তু সে নড়িলনা, বা তাহার কথায় কোনরূপ উত্তরও প্রদান করিল না। তখন সকলেই জানিতে পারিল যে, সে আর জীবিতা নাই।

 দারোগা। প্রথমতঃ বড় লম্বা লম্বা কথা কহিতেছিলে যে, এখন আর মুখ দিয়া কথা বাহির হইতেছে না কেন?

 গোফুর। ইহার ব্যাপার আমি কিছুই বুঝিয়া উঠিতে পারিতেছি না।