ঘর-পােড়া লোক।
২৭
গোফুর। দুইটা জীবনের জন্য যখন তিনি দুই লক্ষ টাকা চাহিতেছেন, তখন একটী জীবনের জন্য যে টাকা তোমার নিকট আছে, তাহা তাহাকে প্রদান কর, তাহাতে যদি তিনি সম্মত না হন, তাহা হইলে অবশিষ্ট টাকা পরে সংগ্রহ করিয়া তাঁহাকে প্রদান করিও।
হোসেন। এই সময় এত টাকা উহার হস্তে প্রদান করিব, আর উনি যদি কিছু না বলিয়া, কেবলমাত্র টাকাগুলি হস্তগত করেন, তাহা হইলে উপায়?
গোফুর। উপায় কিছুই নাই। আমার পুত্রের জীবনের সঙ্গে না হয়, সেই টাকাও নষ্ট হইবে।
দারোগা যেরূপ চরিত্রের লোকই হউক না কেন, আমাদিগের এরূপ অবস্থায় প্রতারিত করিয়া, এইরূপ ভাবে আমাদিগের জীবনের সহিত এত অর্থ গ্রহণ করিতে পারে, এরূপ বিশ্বাসঘাতক বোধ হয়, আজও জন্মগ্রহণ করে নাই। বিশেষতঃ যে দারোগার কথা তুমি বলিতেছ, সেই দারোগা আমার সহিত কখনও অবিশ্বাসের কার্য করেন নাই।
হোসেন। আচ্ছা, তাঁহার কথায় বিশ্বাস করিয়া দেখি, ইহাতে আমাদিগের অদৃষ্টে যাহাই কেন হউক না।
এই বলিয়া হোসেন সেই স্থান হইতে উঠিয়া পুনরায় দারোগা সাহেবের নিকট গমন করিলেন। প্রহরী হাজতের দরজা পুনরায় বন্ধ করিয়া দিল।