৶৹
গীতা ৯ অ ৭ শ্লোক। নিঃসঙ্গ ভগবানের যোগ মায়াই সংসার স্থিতির হেতু; তাই আবার সৃষ্টি ও প্রলয়ের কারণ। কল্পান্তে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড একার্ণব হইলে ভগবান নারায়ণ নিদ্রা জন্য অব্যক্ত প্রকৃতি সহ শায়িত থাকেন অর্থাৎ স্ব স্বরূপে অবস্থান করেন। পুনরায় কল্পারম্ভে তাঁহার সৃষ্টি রাখিবার ইচ্ছা হইলে জগদুৎপত্তির কারনীভূতা সর্ব্বব্যাপিনী অনন্ত শক্তি বা প্রকৃতির বিকাশ হয়। প্রকৃতির প্রথম বিকাশ সাঙ্খ্যমতে মহত্তত্ত্ব এবং মহত্তত্ত্ব হইতে অহঙ্কার উৎপন্ন হয়। যথা “একমূর্ত্তি স্ত্রয়োভাগা ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বরাঃ। সবিকারাৎ প্রধানাত্তু মহত্তত্ত্বং প্রজায়তে”॥ এই মহত্তত্ত্বে প্রধান তিনটী রহিল ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর; সতঃ, রজঃ, তমঃ; বা কাল, চৈতন্য, ও সদসৎ শক্তি। সদসৎ বলিতে সূক্ষ্ম ও কারণ ভাবাপন্ন পদার্থ; তাহা হইতে জড়ের ও জড় জগতের উপাদান সকল প্রকাশ হয়। যখনই কাল ও চৈতন্য উহা হইতে বিভিন্ন হয় তখনই উহা নিরোধরূপে অর্থাৎ প্রলয় রূপে আপন সুক্ষ্মভাবে আপনই লয় হয়। এই জন্ম ইহাতে নিরোধাত্মক ও ভূতোৎপাদক গুণ আছে বলিয়া তমঃ অর্থাৎ নিরোধ বা অপ্রকাশ নামক গুণ প্রকাশিত হয়। কাল হইতে মহত্তত্বের যে গুণ থাকে তাহাকে রজো গুণ বা প্রকাশক গুণ কহে। মহত্তত্ত্বে চৈতন্য থাকায় উহা দ্বারা সদসৎ সজীবত্ব লাভ ও বিলুপ্ত ভাব উদ্ভব করণক শক্তি প্রকাশ হয় বলিয়া তাহাকে সত্ত্ব গুণ কছে। ব্রহ্মা রজগুণ ও দান, বিষ্ণু, সত্ব গুণ ও চৈতন্য এবং মহেশ্বর, তম ও সদসৎ শক্তি পরস্পর একার্থ বাচক। সাত্ত্বিক অহঙ্কার হইতে মনের উদ্ভব। মন সূক্ষ্মদেহ ইন্দ্রিয়াদির অনুভাবাত্মক শক্তি।