পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চমৎকুমারী ইত্যাদি

 জিনিসপত্র সব গোছানো হয়ে গেছে। বিকেল বেলা মনোলোভা বললেন, চল চম্পীদিদির সঙ্গে দেখা করে আসি। তিনি ওই তিরসিংগা পাহাড়ের কাছে লছমনপুরায় আছেন, চিঠিতে লিখেছিলেন আমাদের এই বাসা থেকে বড় জোর সওয়া মাইল।

 বক্রেশ্বর বললেন, আমার ফুরসত নেই। একটা স্কীম মাথায় এসেছে, গভরমেণ্ট যদি সেটা নেয় তবে দেশের সমস্ত বদমাশ শায়েস্তা হয়ে যাবে। এই ছুটির মধ্যেই স্কীমটা লিখে ফেলব। তুমি যেতে চাও যাও, কিন্তু বৈকুণ্ঠকে সঙ্গে নিও।

 —বৈকুণ্ঠর ঢের কাজ। বাজার করবে, দুধের ব্যবস্থা করবে, রান্নার যোগাড় করবে। আর ও তো অথর্ব বুড়ো, ওকে সঙ্গে নেওয়া মিথ্যে। আমি একাই যেতে পারব, ওই তো তিরসিংগা পাহাড় সোজা দেখা যাচ্ছে।

 —ফিরতে দেরি ক’রো না, সন্ধ্যের আগেই আসা চাই।

ছমনপুরায় পৌঁছে মনোলোভা তাঁর চম্পীদিদির সঙ্গে অফুরন্ত গল্প করলেন। বেলা পড়ে এলে চম্পীদিদি ব্যস্ত হয়ে বললেন, যা যা শিগ্‌গির ফিরে যা, নয়তো অন্ধকার হয়ে যাবে, তোর বর ভেবে সারা হবে। আমাদের দুটো চাকরই বেরিয়েছে, নইলে একটাকে তোর সঙ্গে দিতুম। কাল সকালে আমরা তোর কাছে যাব।

 মনোলোভা তাড়াতাড়ি চলতে লাগলেন। মাঝপথে একটা সরু নদী পড়ে, তার খাত গভীর, কিন্তু এখন জল কম। মাঝে মাঝে বড় বড় পাথর আছে, তাতে পা ফেলে অনায়াসে পার হওয়া যায়। নদীর কাছাকাছি এসে মনোলোভা দেখতে পেলেন, বাঁ দিকে কিছু দূরে চার-পাঁচটা মোষ চরছে, তার মধ্যে একটা প্রকাণ্ড শিংওয়ালা জানোয়ার