পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
চয়নিকা

শুধু এক প্রান্তে তার প্রলয়-মগন
বাকি আছে একখানি শঙ্কিত মিলন,
দুটি হাত ত্রস্ত কপোতের মতো, দুটি
বক্ষ দুরুদুরু দুই প্রাণে আছে ফুটি,
শুধু একখানি ভয়, একখানি আশা,
একখানি অশ্রুভরে নম্র ভালোবাসা।


আজিকে এমনি তবে কাটিবে যামিনী
আলস্যবিলাসে। অয়ি নিরভিমানিনী,
অয়ি মোর জীবনের প্রথম প্রেয়সী,
মোর ভাগ্য-গগনের সৌন্দর্যের শশী,
মনে আছে, কবে কোন্ ফুল্ল যূথীবনে
বহু বাল্যকালে, দেখা হোত দুইজনে
আধো চেনা-শোনা? তুমি এই পৃথিবীর
প্রতিবেশিনীর মেয়ে, ধরার অস্থির
এক বালকের সাথে কী খেলা খেলাতে
সখি, আসিতে হাসিয়া, তরুণ প্রভাতে
নবীন বালিকা-মূর্তি, শুভ্রবস্ত্র পরি’
উষার কিরণ-ধারে সদ্যঃস্নান করি’
বিকচ কুসুমসম ফুল্ল মুখখানি,
নিদ্রাভঙ্গে দেখা দিতে, নিয়ে যেতে টানি’
উপবনে কুড়াতে শেফালি। বারে বারে
শৈশব-কর্তব্য হতে ভুলায়ে আমারে,
ফেলে দিয়ে পুঁথিপত্র, কেড়ে নিয়ে খড়ি
দেখায়ে গোপন পথ দিতে মুক্ত করি’
পাঠশালা-কারা হতে; কোথা গৃহকোণে
নিয়ে যেতে নির্জনেতে রহস্য-ভবনে