পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
চয়নিকা
৩৩৭

হীরা-মুক্তা-মাণিক্যের ঘটা
যেন শূন্য দিগন্তের ইন্দ্রজাল ইন্দ্রধনুচ্ছটা,
যায় যদি লুপ্ত হয়ে যাক,
শুধু থাক
একবিন্দু নয়নের জল
কালের কপােলতলে শুভ্র সমুজ্জ্বল।
এ তাজমহল।
হায় ওরে মানব-হৃদয়
বারবার
কারো পানে ফিরে চাহিবার
নাই যে সময়,
নাই নাই।
জীবনের খরস্রোতে ভাসিছ সদাই
ভুবনের ঘাটে ঘাটে ;
এক হাটে লও বােঝা, শূন্য করে দাও অন্য হাটে
দক্ষিণের মন্ত্র-গুঞ্জরণে
তব কুঞ্জবনে
বসন্তের মাধবী-মঞ্জরী
যেই ক্ষণে দেয় ভরি’
মালঞ্চের চঞ্চল অঞ্চল,
বিদায়-গোধূলি আসে ধুলায় ছড়ায়ে ছিল।
সময়-যে নাই ;
আবার শিশিররাত্রে তাই
নিকুঞ্জে ফুটায়ে তােলে। নব কুন্দরাজি।
সাজাইতে হেমন্তের অশ্রুভরা আনন্দের সাজি
হায়রে হৃদয়,
তােমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথ-প্রান্তে ফেলে যেতে হয়—
নাই নাই, নাই-যে সময়।

২২