পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
চয়নিকা

পাদুকাতলে পড়িয়া লুটি’ ঘৃণায়-মাথা অন্ন খুঁটি’
ব্যগ্র হয়ে ভরিয়া মুঠি যেতেছ ফিরি’ ঘর।
ঘরেতে ব’সে গর্ব করো পূর্বপুরুষের,
আর্য-তেজ-দর্পভরে পৃথ্বী থর থর।

হেলায়ে মাথা, দাঁতের আগে মিষ্টহাসি টানি’
বলিতে আমি পারিব না তো ভদ্রতার বাণী।
উচ্ছ্বসিত রক্ত আসি’ বক্ষতল ফেলিছে গ্রাসি’
প্রকাশহীন চিন্তারাশি করিছে হানাহানি।
কোথাও যদি ছুটিতে পাই বাঁচিয়া যাই তবে,
ভব্যতার গণ্ডিমাঝে শান্তি নাহি মানি।

১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১২৯৫
—মানসী

বর্ষার দিনে

এমন দিনে তারে বলা যায়,
এমন ঘনঘোর বরিষায়।
এমন মেঘস্বরে বাদল ঝরঝরে
তপনহীন ঘন তমসায়।

সে কথা শুনিবে না কেহ আর,
নিভৃত নির্জন চারিধার।
দু-জনে মুখোমুখি গভীর দুখে দুখী;
আকাশে জল ঝরে অনিবার,
জগতে কেহ যেন নাহি আর।

সমাজ সংসার মিছে সব,
মিছে এ জীবনের কলরব।