পাতা:চরিত্রহীন - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্রহীন Sy উপেন্দ্ৰ কহিল, হাঁ । কিরণময়ী কহিল, তা হলে আমিও জোর করে ধরে রাখবার চেষ্টা করব । কিন্তু বলে রাখাঁচ ঠাকুরপো, এই জোরের পরীক্ষায় আমার লাভ ছাড়া লোকসান সুনাই ৷ এই উত্তরের পর উপেন্দ্র ঘাড় হেট করিয়া বসিয়া রহিল। কিরণময়ী পােনরায় হাসিয়া কহিল,-ভয় নেই গো, ভয় নেই।--তোমার অনিচ্ছায় গায়ে পড়ে তোমার গায়ে হাত দেব এত উন্মাদ এখনো হইনি। ইচ্ছা হয় উঠে যাও- আমি বাধা দেব। 歼1 উপেন্দ্র অধোমখে স্তবধ হইয়া বসিয়া রহিল । মেঘে ঢাকা চাঁদ চোখে দেখা না গেলেও চারিদিকে ঝাপসা জ্যোৎস্নার ইঙ্গিতে আসল বস্তুটুকু যেমন জানা যায়, এই দটি নর-নারীর গোপন সম্প্ৰবন্ধটাও এতক্ষণ পর্যন্ত ততটুক মাত্রই আড়ালে ছিল । কিন্তু হাওয়া উঠিয়াছে, মেঘ দ্রুত সরিয়া যাইতেছে, অন্তরের মধ্যে উপেন্দ্র তাহা নিশ্চিত অনভব করিয়াই এমন করিয়া পালাইবার চেষ্টা করিতেছিল, কিন্তু সমস্তু বিফল হইয়া গেল । সহসা একটা দমকা বাতাসে সমস্ত আবরণ ছিড়িয়া দিয়া যতদর দেখা যায়, সমমাখের আকাশ অনাবত হইয়া উঠিল । কিরণময়ী ধীরে ধীরে কহিল, যাক, তোমাকে যে ভালবাসি তা জানিয়ে দিয়ে আমি বাঁচলাম। এখন তোমার যা খাঁশি করো, আমার কিছই বলবার নেই। কিন্তু মনে করো না ঠাকরপো, আমি অন্ধ-আশায় ভুলে এ কথা জানালাম । আমি তোমাকে চিনি, আমি জানি এ নিৰ্ম্মফল, একেবারে নিম্ৰফল ; রক্ষক হয়ে এসে যে তুমি ভক্ষক হতে পারবে না, কোনমতেই না, এ আমি জানি । এতক্ষণে উপেন্দ্ৰ কথা কহিল, মাদকণ্ঠে প্রশন করিল, এ শ্ৰদ্ধা যদি আমার 'পরে আছে, তবে জানালেন কেন ? কিরণময়ী কহিল, তার দটো কারণ আছে। প্রথম কারণ, না জানালে আমি পাগল হয়ে যৌতুম। দ্বিতীয় কারণ, তোমাকে সব কথা না বলে তোমার আশ্রয় নেওয়া আমার অসম্ভব । তা হলে আমার কেবল মনে হতো সরবালাই আমাকে যেন খাওয়াচ্চে পর্যাচ্চে-কিন্তু এখন যদি এর পরেও তুমি আমার ভার নাও-মনে হবে এ শােধ তোমারই খাচ্চি-পরচি, আর কারো নয়। আচ্ছা, সরবালাকে আমার কথা बद्धव ठ ? छेroन्द्ध कश्व्नि, ना । কিরণময়ী প্রশন করিল, না কেন ? শানলে সে কষ্ট পাবে ? উপেন্দ্ৰ কহিল, না বৌঠান, কনট সে পাবে না । সে ভারী বোকা । ভদ্রলোকের মেয়ে স্বামী ছাড়া আর কোন লোককে কোন অবস্থাতেই ভালবাসতে পারে, এ কথা হাজার বললেও তার মাথায় ঢািকবে না। কিন্তু অনািমতি করেন ত এখন উঠি । কথাটা কিরণময়ীকে তীক্ষা আঘাত করিল, কিন্তু সে সহজকণ্ঠে কহিল, অনািমতি না করে ত উপায় নেই, করতেই হবে। কিন্তু আর একটু বসো ।