পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১২৮
চাঁদের পাহাড়

ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে তাকে চলতে হবে, ভাগ্য ভাল হয় বন পার হতে পারবে, ভাগ্য প্রসন্ন না হয় - মৃত্যু।

 দুটো তিনটে ছোট পাহাড় সে পার হয়ে চলল। বন কখনো গভীর,কখনো পাতলা। কিন্তু বৃহৎ বৃহৎ বনস্পতির আর শেষ নেই। শঙ্করের জানা ছিল যে, দীর্ঘ এলিফ্যাণ্ট ঘাসের জঙ্গল এলে বুঝতে হবে যে বনের প্রান্তসীমায় পৌছানো গিয়েচে। কারণ গভীর জঙ্গলে কখনো এলিফ্যাণ্ট বা টুসক্ ঘাস জন্মায় না। এলিফ্যাণ্ট ঘাসের চিহ্ন নেই কোনোদিকে - শুধুই বনস্পতি আর নীচু বনঝোপ।

 প্রথম দিন শেষ হোল এক নিবিড়তর অরণ্যের মধ্যে। শঙ্কর জিনিসপত্র প্রায় সবই ফেলে দিয়ে এসেছিল, কেবল আলভারেজের মানলিকার রাইফেলটা, অনেকগুলো টোটা, জলের বোতল, টর্চ্চ, ম্যাপগুলো, কম্পাস, ঘড়ি, একখানা কম্বল ও সামান্য কিছু ঔষধ সঙ্গে নিয়েছিল — আর নিয়েছিল একটা দড়ির দোলনা। তাঁবুটা যদিও খুব হালকা ছিল, কিন্তু তা সে বয়ে আনা অসম্ভব বিবেচনায় ফেলেই এসেচে।

 দুটো গাছের ডালে মাটী থেকে অনেকটা উঁচুতে সে দড়ির দোলনা টাঙালে এবং হিংস্র জন্তুর ভয়ে গাছতলায় আগুন জ্বালালে। দোলনায় শুয়ে বন্দুক হাতে জেগে রইল কারণ ঘুম অসম্ভব একে ভয়ানক মশা, তার ওপর সন্ধ্যার পর থেকে গাছতলার কিছুদূর দিয়ে একটা চিতাবাঘ যাতায়াত সুরু করলে। গভীর অন্ধকারে তার চোখ জ্বলে যেন দুটো