পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

えb" চারিত্রপূজা নূতন বস্ত্র কিনিয়া দিতেন। পূজার ছুটির পর দেশে গিয়া “দেশস্থ যে সকল লোকের দিনপাত হওয়া দুষ্কর দেখিতেন, তাহাদিগকে যথাসাধ্য সাহায্য করিতে ক্ষান্ত থাকিতেন না। অন্যান্ত লোকের পরিধেয় বস্ত্র না থাকিলে, গামছা পরিধান করিয়া নিজের বস্ত্রগুলি তাহাদিগকে বিতরণ করিতেন ।” * যে অবস্থায় মানুষ নিজের নিকট নিজে প্রধান দয়ার পাত্র, সে অবস্থায় ঈশ্বরচন্দ্র অন্তকে দয়া করিয়াছেন। তাহার জীবনে প্রথম হইতে ইহাই দেখা যায় যে, তাহার চরিত্র সমস্ত প্রতিকূল অবস্থার বিরুদ্ধে ক্রমাগতই যুদ্ধ করিয়া জয়লাভ করিয়াছে। তাহার মতো অবস্থাপন্ন ছাত্রের পক্ষে বিদ্যালাভ করা পরম দুঃসাধ্য, কিন্তু এই গ্রাম্যবালক শীর্ণ খৰ্ব্বদেহ এবং প্রকাও মাথা লইয়া আশ্চৰ্য্য অল্পকালের মধ্যেই বিদ্যাসাগরউপাধি প্রাপ্ত হইয়াছেন। তাহার মতো দরিদ্রাবস্থার লোকের পক্ষে দান করা, দয়া করা বড়ো কঠিন, কিন্তু তিনি যখন যে অবস্থাতেই পড়িয়াছেন, নিজের কোনোপ্রকার অসচ্ছলতায় তাহাকে পরের উপকার হইতে বিরত করিতে পারে নাই, এবং অনেক মহৈশ্বৰ্য্যশালী রাজারায়বাহাদুর প্রচুর ক্ষমতা লষ্টয়া যে উপাধি লাভ করিতে পারে নাই, এই দরিদ্র পিতার দরিদ্র সন্তান সেই ‘দয়ার সাগর’ নামে বঙ্গদেশে চিরদিনের জন্য বিখ্যাত হইয়া রহিলেন । কলেজ হইতে উত্তীর্ণ হইয়া বিদ্যাসাগর প্রথমে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের প্রধান পণ্ডিত ও পরে সংস্কৃতকলেজের অ্যাসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারির পদে নিযুক্ত হন। এই কাৰ্য্যোপলক্ষ্যে তিনি যে সকল ইংরেজ প্রধানকৰ্ম্মচারীদের সংস্রবে আসিয়াছিলেন, সকলেরই পরম শ্রদ্ধা ও প্রীতিভাজন হইয়াছিলেন। আমাদের দেশে প্রায় অনেকেই নিজের এবং

  • সহোদর শঙ্চত্র বিদ্যারত্ব প্রণীত বিদ্যাসাগর জীবনচরিত, ৩৭ পৃষ্ঠা।