পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগরচরিত 3)రి বালবিধবাদের দুঃখে ব্যথিত হইয়া বিধবাবিবাহপ্রচলনের চেষ্টা করেন, তখন দেশের মধ্যে সংস্কৃতশ্লোক ও বাংলা গালি মিশ্রিত এক তুমুল কলকোলাহল উখিত হইল। সেই মুষলধারে শাস্ত্র ও গালিবর্ষণের মধ্যে এই ব্রাহ্মণবীর বিজয়ী হইয়া বিধবাবিবাহ শাস্ত্রসন্মত প্রমাণ করিলেন এবং -ডাই রাজবিধিসন্মত করিয়া লইলেন। বিদ্যাসাগর এই সময়ে আরো এক ক্ষুদ্র সামাজিক যুদ্ধে জয়লাভ করিয়াছিলেন, এস্থলে তাহারও সংক্ষেপে উল্লেখ আবশ্বক। তখন সংস্কৃতকলেজে কেবল ব্রাহ্মণেরই প্রবেশ ছিল, সেখানে শূত্রেরা সংস্কৃত পড়িতে পাইত না। বিদ্যাসাগর সকল বাধা অতিক্রম করিয়া শূদ্ৰদিগকে সংস্কৃতকলেজে বিদ্যাশিক্ষার অধিকার দান করেন । ংস্কৃতকলেজের কৰ্ম্ম ছাড়িয়া দিবার পর বিদ্যাসাগরের প্রধানকীৰ্ত্তি মেট্রোপলিটান ইন্‌ষ্টটুগুন। বাঙালির নিজের চেষ্টায় এবং নিজের অধীনে উচ্চতর শিক্ষার কলেজস্থাপন এই প্রথম। আমাদের দেশে ইংরেজিশিক্ষাকে স্বাধীনভাবে স্থায়ী করিবার এই প্রথম ভিত্তি বিদ্যাসাগরকত্ত্বক প্রতিষ্ঠিত হইল। যিনি দরিদ্র ছিলেন, তিনি দেশের প্রধান দত হইলেন ; যিনি লোকাচাররক্ষক ব্রাহ্মণপণ্ডিতের বংশে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, তিনি লোকাচারের একটি মুদৃঢ় বন্ধন হইতে সমাজকে মুক্ত করিবার জন্ত স্বকঠোর সংগ্রাম করিলেন, এবং সংস্কৃতবিদ্যায় যাহার অধিকারের ইয়ত্তা ছিল না, তিনিই ইংরেজিবিদ্যাকে প্রকৃতপ্রস্তাবে স্বদেশের ক্ষেত্রে বদ্ধমূল করিয়া রোপণ করিয়া গেলেন। বিদ্যাসাগর তাহার অবশিষ্টকাল এই স্কুল ও কলেজটিকে একাগ্রচিত্তে প্রাণাধিক যত্নে পালন করিয়া, দীনদরিদ্র রোগীর সেবা করিয়া, অকৃতজ্ঞদিগকে মার্জনা করিয়া, বন্ধুবান্ধবদিগকে অপরিমেয় স্নেহে অভিষিক্ত করিয়া, আপন পুষ্পকোমল এবং বজ্রকঠিন বক্ষে দুঃসহ বেদনাশল্য বহন O