পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*8br গরিত্রপূজা মননক্রিয়াদ্বারা যে মন জীবিত, তাহাকেও আত্মরক্ষার জন্তই নিজের পথ নিজে খুজিয়া বাহির করিতে হয়। দশজনের মধ্যে ভাসিয়া চলা তাহার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। সাধারণ বাঙালির সহিত বিদ্যাসাগরের ষে একটি জাতিগত স্বমহান প্রভেদ দেখিতে পাওয়া যায়, সে প্রভেদ শান্ত্রিমহাশয় যোগবশিষ্ঠের একটিমাত্র শ্লোকের দ্বারা পরিস্ফুট করিয়াছেন। আমাদের অপেক্ষ বিদ্যাসাগরের একটা জীবন অধিক ছিল । তিনি কেবল দ্বিজ ছিলেন না, তিনি দ্বিগুণ-জীবিত ছিলেন। সেইজন্য র্তাহার লক্ষ্য, তাহার আচরণ, তাহার কার্য্যপ্রণালী আমাদের মতো ছিল না । আমাদের সম্মুখে আছে আমাদের ব্যক্তিগত স্বখদুঃখ, ব্যক্তিগত লাভক্ষতি ; র্তাহার সম্মুখেও অবহু সেগুলা ছিল, কিন্তু তাহার উপরও ছিল তাহার অন্তজীবনের সুখদুঃখ, মনোজীবনের লাভক্ষতি। সেই মুখদুঃখ-লাভক্ষতির নিকট বাহ সুখদুঃখ-লাভক্ষতি কিছুই নহে। আমাদের বহিজীবনেরও একটা লক্ষ্য আছে, তাহাকে সমস্ত জড়াইয়া এক কথায় স্বাৰ্থ বলা যায়। আমাদের খাওয়া-পর-শোয়া, কাজকৰ্ম্ম করা, সমস্ত স্বার্থের অঙ্গ । ইহাই আমাদের বহিজীবনের মূলগ্রন্থি। মননের দ্বারা আমরা যে অস্তজীবন লাভ করি, তাহার মূললক্ষ্য পরমার্থ। এই আম্মহল ও খাসমহলের দুই কর্তী—স্বার্থ ও পরমার্থ, ইহাদের সামঞ্জস্তসাধন করিয়া চলাই মানবজীবনের আদর্শ। কিন্তু মধ্যে মধ্যে সংসারের বিপাকে পড়িয়া যে অবস্থায় ‘অৰ্দ্ধং ত্যজতি পণ্ডিতঃ’, তখন পরমার্থকে রাখিয়া স্বার্থই পরিত্যাজ্য, এবং যাহার মনোজীবন প্রবল, তিনি অবলীলাক্রমে সেই কাজ করিয়া থাকেন।