পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*o চারিত্রপূজা ভারতসভ্যতার প্রতিবাদ করে তবু বলব এ কথা সত্য ৷ মানুষের ঐক্যের বার্তা রামমোহন রায় একদিন ভারতের বাণীতেই ঘোষণা করেছিলেন, এবং তার দেশবাসী তাকে তিরস্কৃত করেছিল,—তিনি সকল প্রতিকূলতার মধ্যে দাড়িয়ে আমন্ত্রণ করেছিলেন মুসলমানকে খৃষ্টানকে ভারতের সর্বজনকে হিন্দুর এক পংক্তিতে ভারতের মহা অতিথিশালায়। যে ভারত বলেছে— যস্ত সৰ্ব্বাণি ভূতানি আত্মন্তেবানুপগুতি সৰ্ব্ব ভূতেষু চাত্মানং ততো ন বিজুগুপসতে । যিনি সকলের মধ্যে আপনাকে, আপনার মধ্যে সকলকে দেখেন তিনি কাউকে ঘৃণা করেন না । র্তার মৃত্যুর পরে আজ একশত বৎসর অতীত হোলো। সেদিনকার অনেক কিছুই আজ পুরাতন হয়ে গেছে কিন্তু রামমোহন রায় পুরাতত্ত্বের অস্পষ্টতায় আবৃত হয়ে যান নি। তিনি চিরকালের মতোই আধুনিক। কেন-না তিনি যে-কালকে অধিকার ক’রে আছেন তার এক সীমা পুরাতন ভারতে ; কিন্তু সেই অতীতকালেই তা আবদ্ধ হয়ে নেই। তার অন্যদিক চলে গিয়েছে ভারতের সুদূর ভাবীকালের অভিমুখে । তিনি ভারতের সেই চিত্তের মধ্যে নিজের চিত্তকে মুক্তি দিতে পেরেছেন যা জ্ঞানের পথে সৰ্ব্বমানবের মধ্যে উন্মুক্ত। তিনি বিরাজ করছেন ভারতের সেই আগামী কালে, যে-কালে ভারতের মহা ইতিহাস আপন সত্যে সার্থক হয়েছে, হিন্দু মুসলমান খৃষ্টান মিলিত হয়েছে অখও মহাজাতীয়তায়। বায়ুপোতে অত্যুদ্ধ আকাশে যখন ওঠা যায় তখন দৃষ্টিচক্র যতদূর প্রসারিত হয়, তার একদিকে থাকে যে-দেশকে বহুদূরে অতিক্রম করে এসেছি, আর একদিক থাকে সম্মুখে, যা এখনো আছে বহুযোজন দূরে। রামমোহন যে কালে বিরাজ করেন সে কাল তেমনি