পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ চারিত্রপূজা २ আমাদের প্রাণ বিদ্রোহী। চারিদিকে জড়দানব তার প্রকাও শক্তি, ও অসংখ্য বাছ বিস্তার করে বসে আছে। ক্ষুদ্র প্রাণ প্রতি মুহূর্তে নানাদিক থেকে তাকে নিরস্ত ক’রে তবে আত্মপ্রকাশ করে। এই জড়তার চারিদিকে ক্লাস্তির প্রাচীর তুলে তুলে তার প্রয়াসের পরিধিকে কেবলি সঙ্কীর্ণ ক’রে আনতে চায়। বারদ্বার এই প্রাচীরকে ভেঙে ভেঙে তবে প্রাণ আপন অধিকার রক্ষা করতে পারে। তাই আমাদের হৃৎপিও দিনে রাত্রে এক মুহূৰ্ত্ত ছুটি নিতে পারে না, গুরুতর বস্তুপুঞ্জের নিক্রয়তার বিরুদ্ধে তার আক্রমণ ক্ষান্ত হোলেই মৃত্যু। প্রাণের এই নিত্য সচেষ্টতাতেই যেমন প্রাণের আত্মপ্রকাশ, মনেরও তাই । তার অনন্ত জিজ্ঞাসা । চারদিকে সত্যের রহস্ত মূক হয়ে আছে । আপন শক্তিতে উত্তর আদায় করতে হয়। অল্প অনবধান হোলেই ভুল উত্তর পাই। সেই ভুল উত্তরগুলিকে নিশ্চেষ্ট নি:সংশয়ে স্বীকার ক’রে নিলেই মনের সাংঘাতিক পরাভব। জিজ্ঞাসার শৈথিল্যেই মনের জড়ত । যেমন জীবনীশক্তির নিরুদ্যমেই অস্বাস্থ্য, তাতেই যত রোগের উৎপত্তি, বিনাশের আয়োজন, তেমনি মননশক্তির অবসাদ ঘটলেই মানুষের জ্ঞানের রাজ্যে যত রকমের বিকার প্রবেশ করে। সত্য মিথ্যা ভালোমন সমস্ত কিছুকেই বিনাপ্রশ্নে অলস ভীরু মন যখন মেনে নিতে থাকে তখনই মনুষ্যত্বের সকল প্রকার দুর্গতি। জড়ের মধ্যে যে আচল মূঢ়তা, মানুষের মন যখনি তার সঙ্গে আপোষে সন্ধি করে তখন থেকে জগতে মানুষ, মনমরা হয়ে থাকে, জড় রাজার খাজনা জুগিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। আমাদের দেশে একদিন মনের স্বরাজ গিয়েছে ধ্বংস হয়ে। পঙ্গু মনের ছিল না আত্মকর্তৃত্ব, প্রশ্ন করবার শক্তি ও ভরসা সে হারিয়েছিল ।