จ8 চারিত্রপূজা দিনেই রামমোহন রায়ের এদেশে আবির্ভাব। প্রবল শক্তিতে তিনি আঘাত করেছিলেন সেই দুরবস্থার মূলে, যা মামুষের পরম সম্পদ স্বাধীনবুদ্ধিকে অবিশ্বাস করেছে। কিন্তু তখন আমরা সেই দুরবস্থার কারণকেই পূজা করতে অভ্যস্ত, তাই, সেদিন আমরাও তাকে শক্ৰ ব’লে দও উষ্ঠত করেছি। ডাক্তার বলেন, রোগ জিনিষটা দেহের অধিকার সম্বন্ধে দীর্ঘকালের দলিল দাখিল করলেও সে বাইরের আগন্তুক, স্বাস্থ্যতত্ত্বই দেহের অন্তর্নিহিত চিরন্তন সত্য। রামমোহন রায় তেমনি করেই বলেছিলেন আমাদের অজ্ঞানকে আমাদের অন্ধতাকে কালের গণনায় সনাতন বলি, কিন্তু সত্যের দিক থেকে তাই আমাদের অনাত্মীয় আগন্তুক। তিনি দেখিয়েছিলেন আমাদের দেশের অন্তরাত্মার মধ্যেই কোথায় আছে বিশুদ্ধ জ্ঞানের চিরপুরাতন চিরনূতন প্রতিষ্ঠা ; মনের স্বাস্থ্যকে আত্মার শক্তিকে প্রবল করবার জন্তে, উজ্জল করবার জন্তে ভারতের একান্ত আপন যে সাধন-সম্পদের ভাণ্ডার তারই দ্বার তিনি খুলে দিয়েছিলেন, সেদিনকার জনতা তাকে শত্রু ব’লে ঘোষণা করেছিল। আজও কি রামমোহনকে আমরা শত্রু ব’লে অসম্মান করতে পারি ? যার গৌরবে দেশ বিশ্বের কাছে আপন গৌরবের পরিচয় দিতে পারে এমন লোক কি আমাদের অনেক আছে ? দেশের যথার্থ মহাপুরুষের নামে গৌরব করার অর্থই দেশের ভবিষ্যতের জন্তেই আশা করা। সে গৌরব প্রাদেশিক হোলে সাময়িক হোলে তার উপরে নির্ভর করা চলে না । সে গৌরব এমন হওয়া চাই সমস্ত পৃথিবী যার সমর্থন করে। রামমোহনের চিত্ত, তার হৃদয় স্থানিক ও ক্ষণিক পরিধিতে বদ্ধ ছিল না । যদি থাকত তবে দেশের সাধারণ লোকে অনায়াসে র্তাকে সমাদর করতে পারত। কারণ যে মানদণ্ড আমাদের নিত্য ব্যবহারের দ্বারা সুপরিচিত তা বিশেষ দেশকালের, তা সৰ্ব্বদেশ ও চিরন্তন কালের নয়। কিন্তু সেই
পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৭৮
অবয়ব