পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

प्ररै চারিত্রপূজা বুঝতে দেরি হোত না যে, কাছে থেকেও তাকে নাগাল পাওয়া যায় না ? তার পরে স্বাস্থ্যভঙ্গের সময় তিনি যখন কলকাতায় ছিলেন, তখন আমার যুবক বয়সে তার কাছে প্রায়ই বিষয়-কৰ্ম্মের ব্যাপার নিয়ে যেতে হোত । প্রতিমাসের প্রথম তিনটে দিন ব্রাহ্মসমাজের খাতা, সংসারের খাতা, জমিদারীর খাতা নিয়ে তার কাছে কম্পান্বিত-কলেবরে বেতুম। তার শরীর তখন শক্ত ছিল না, চোখে কম দেখতেন, তবুও শুনে শুনে অঙ্কের সামান্ত ক্রটিও তিনি চট্‌ ক’রে ধরে ফেলতেন। এই সময়েও তার সেই স্বভাবসিদ্ধ ঔদাসীষ্ঠ ও নিলিপ্ততা আমায় বিস্মিত করেছে। আমাদের সকল আত্মীয়-পরিজনের মধ্যে তিনি ছিলেন তেমনি এক৷ যেমন এক সৌরপরিবারে স্বৰ্য্য—স্বীয় উপলব্ধির জ্যোতিমণ্ডলের মধ্যে তিনি আত্মসমাহিত থাকতেন। তার প্রকৃতিগত নিরাসক্তির প্রকৃত দান হোলে এই আশ্রম ; জনতা থেকে দূরে, অথচ কল্যাণস্থত্রে জনতার সঙ্গে আবদ্ধ। প্রকৃতির সৌন্দর্য্যের মধ্যে যে আনন, এবং আত্মার আনন্দ, এই দুইয়েরও প্রতীক হোলো এই আশ্রম। এই দুই আনন্দ মিলে তার জীবনকে পরিপূর্ণ করেছিল। যে-চিত্তবৃত্তি থাকলে মানুষকে সঙ্ঘবদ্ধ করা যায় সে তার ছিল না। উপনিষদের মন্ত্র উপলব্ধির আনন্দ তার অস্তরে নিহিত ছিল—সাধারণের জন্তে সে আনন্দকে ছোটো ক’রে বা জল মিশিয়ে পরিবেষণ করতে পারেন নি। এই সকল কারণেই তার চার দিকে বিশেষ কোনও একটা সম্প্রদায় গ’ড়ে ওঠে নি। আপনার চরিত্র ও জীবনের মধ্য দিয়ে তিনি র্তার জ্ঞান ও প্রেমের আদর্শ রেখে গেছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু তিনি রেখে যান নি, কারণ জনতাকে বন্দী করার দুর্গপ্রতিষ্ঠা তার স্বভাব-বিরুদ্ধ ছিল। র্তার প্রকৃত দান এই আশ্রম ; এই আশ্রমে আসতে হোলে দীক্ষা নিতে হয় না, খাতায় নাম লিখতে হয় না—যে আসতে পারে, সেই