পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাপুরুষ । S eS নাই, কিন্তু তাহারা শুনিতে পাইয়াছেন। তখন চারিদিকের কোলাহল হইতে ক্ষণকালের জন্য মনটাকে টানিয়া লই, আমরাও কান পাতিয়া দাড়াই। অতএব মহাপুরুষদের জীবন হইতে আমরা প্ৰথমে স্পষ্ট জানিতে পারি, আত্মার প্রতি পরমাত্মায় আহবান কতখানি সত্য । এই জানিতে পারাটাই লাভ ৷ তার পরে আর একদিন তঁহাদিগকে দেখিতে পাই, সুখে-দুঃখে । র্তাহারা শান্ত, প্রলোভনে তাহারা অবিচলিত, মঙ্গলব্রতে তাহারা দৃঢ়প্ৰতিষ্ঠ । দেখিতে পাই, তাহাদের মাথার উপর দিয়া কত ঝড় চলিয়া যাইতেছে, কিন্তু তঁহাদের হাল ঠিক আছে ; সর্বস্বাক্ষতির সম্ভাবনা তঁহাদের সম্মুখে বিভীষিকারূপে আবির্ভূত হইয়াছে, কিন্তু তাহার। অনায়াসেই তাহাকে স্বীকার করিয়া ন্যায়াপথে ধ্রুব হইয়া আছেন ; আত্মীয়বন্ধুগণ র্তাহাদিগকে পরিত্যাগ করিতেছে, কিন্তু তঁাহারা প্ৰসন্নচিত্তে সে সকল বিচ্ছেদ বহন করিতেছেন ; তখনই আমরা বুঝিতে পারি, আমরা কী পাই নাই, আর র্তাহারা কী পাইয়াছেন। সে কোন শান্তি, কোন বন্ধু, কোন সম্পদ! তখন বুঝিতে পারি, আমাদিগকেও নিতান্তই কি পাওয়া চাই, কোন লাভে আমাদের সকল অন্বেষণ শাস্তু इक्षेत्र शांक्षे८द । । অতএব মহাপুরুষদের জীবনে আমরা প্ৰথমে দেখি, তাহারা কোন আকর্ষণে সমস্ত ত্যাগ করিয়া চলিয়াছেন ; তাহার পরে দেখিতে পাই, কোন লাভে র্ত্যহাদের সমস্ত ত্যাগ সার্থক হইয়াছে! এইদিকে আমাদের মনের জাগরণটাই আমাদের লাভ। কারণ, এই জাগরণের অভাবেই কোনো লাভই সম্পন্ন হইতে পারে না । তার পরে যদি ভাবিয়া দেখি, পাইবার ধন কোথায় পাওয়া যাইবে, কেমন করিয়া পাইৰ, তবে এই প্রশ্নই করিতে হইবে, তাহারা কোথায় গিয়াছেন, কেমন করিয়া পাইয়াছেন ! /