পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চারিত্রিপূজা » রাখে, বাহিরে তঁহাদের পাথরের মূৰ্ত্তি গড়িয়া রাখিলে আমার তাহাক্তে কী লাভ ? 歌 তঁহাদের তাহাতে লাভ আছে, এমন কথা উঠতেঞ্জী পারে। লোকে দল বাধিয়া প্ৰতিমা স্থাপন করিবে, অথবা মৃতদেহ বিশেষ স্থানে সমাহিত হইয়া গৌরব প্ৰাপ্ত হইবে, এই আশা স্পষ্টত বা অলক্ষ্যে মনকে উৎসাহ দিতেও পারে। কবরের দ্বারা খ্যাতিলাভ করিবার একটা মোহ আছে, তাহা তাজমহল প্ৰভৃতির ইতিহাস হইতে জানা। যায় । কিন্তু আমাদের সমাজ মহাত্মাদিগকে সেই বেতন দিয়া বিদায় করিতে চাহে নাই। আমাদের সমাজে মাহাত্ম্য সম্পূর্ণ বিনা-বেতনের। ভারতবর্ষে অধ্যাপক, সমাজের নিকট হইতে ব্ৰাহ্মণের প্রাপ্য দানদক্ষিণ গ্ৰহণ করিয়া থাকেন, কিন্তু অধ্যাপনার বেতন শোধ করিয়া দিয়া আমাদের সমাজ তাহাদিগকে অপমানিত করে না। পূর্বেই বলিয়াছি, মঙ্গলকৰ্ম্ম যিনি করিবেন, তিনি নিজের মঙ্গলের জন্যই করিবেন, ইহাই ভারতবর্ষের আদর্শ। কোনো বাহামূল্য লইতে গেলেই মঙ্গলের মূল্য কমিয়া যায়। দলের একটা উৎসাহ আছে, তাহা সংক্রামক-তােহা মূঢ়ভাবে পরস্পরের মধ্যে সঞ্চারিত হয়-তাহার অনেকটা অলীক । “গোলে হরিবোল” ব্যাপারে হরি বোল যতোটা থাকে, গোলের মাত্ৰা তাহা, অপেক্ষা অনেক বেশি হইয়া পড়ে। দলের আন্দোলনে অনেক সময়, তুচ্ছ উপলক্ষ্যে ভক্তির ঝড় উঠতে পারে-তাহার সাময়িক প্ৰবলতা। যতোই হোক না কেন, ঝড়-জিনিষটা কখনই স্থায়ী নহে। সংসারে এমন কতোবার কতোশত দলের দেবতার অকস্মাৎ সৃষ্টি হইয়াছে এবং জয়ঢাক বাজিতে বাজিতে অভিলম্পর্শ বিস্মৃতির মধ্যে তাহদের বিসর্জন হইয়াছে। পাথরের মূৰ্ত্তি গড়িয়া জবরদস্তি করিয়া কি কাহাকেও