পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'ss চারিত্রিপূজা এইসময় ময়েট্‌সাহেবের অনুরোধে বিদ্যাসাগর ক্যাপ্তেন-ব্যাঙ্ক-নামক একজন ইংরাজকে কয়েকমাস বাংলা ও হিন্দী শিখাইতেন। সাহেব যখন মাসিক পঞ্চাশটাকা হিসাবে বেতন দিতে গেলেন, তিনি বলিলেন, আপনি ময়েটুসাহেবের বন্ধু এবং ময়েটসাহেব আমার বন্ধু—আপনার কাছে আমি বেতন লাইতে পারি না । ১৮৫০ খৃষ্টাব্দে বিদ্যাসাগর সংস্কৃতকলেজের সাহিত্য-অধ্যাপক ও ১৮৫১ খৃষ্টাব্দে উক্ত কলেজের প্রিন্সিপল পদে নিযুক্ত হন। আট বৎসর দক্ষতার সহিত কাজ করিয়া শিক্ষাবিভাগের নবীন কৰ্ত্তা এক তরুণ সিবিলিয়ানের সহিত মনান্তর হইতে থাকায় ১৮৫৮ খৃষ্টাব্দে তিনি কৰ্ম্মত্যাগ করেন। বিদ্যাসাগর স্বভাবতই সম্পূর্ণ স্বাধীনতন্ত্রের লোক ছিলেন ; অব্যাহতভাবে আপন ইচ্ছা চালনা করিতে পাইলে তবে তিনি কাজ করিতে পারিতেন ; উপরিাতন কর্তৃপক্ষের মতের দ্বারা কোনোরূপ প্ৰতিঘাত প্ৰাপ্ত হইলে তদনুসারে আপনি সঙ্কল্পের প্রবাহ তিলমাত্ৰ পরিবর্তন করিতে পারিতেন না। কৰ্ম্মনীতির নিয়মে ইহা তাহার পক্ষে প্ৰশংসনীয় ছিল না, কিন্তু বিধাতা তাহাকে একাধিপত্য করিবার জন্য পাঠাইয়াছিলেন ; অধীনে কাজ চালাইবার গুণগুলি তাহাকে দেন। নাই। উপযুক্ত অধীনস্থ কৰ্ম্মচারী বাংলাদেশে যথেষ্ট আছে,— বিদ্যাসাগরকে দিয়া তাহদের সংখ্যাবৃদ্ধি করা বিধাতা অনাবশ্যক ও অসঙ্গত বোধ করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর যখন সংস্কৃতকলেজে নিযুক্ত, তখন কলেজের কাজকর্মের মধ্যে থাকিয়াও এক প্ৰচণ্ড সমাজসংগ্রামে প্ৰবৃত্ত হইয়াছিলেন । একদিন বীরসিংহবাটীর চণ্ডীমণ্ডপে বসিয়া ঈশ্বরচন্দ্ৰ তাহার পিতার সহিত বীরসিংহ স্কুলসম্বন্ধে আলোচনা করিতেছিলেন, এমন সময় তাহার মাতা রোদন করিতে করিতে চণ্ডীমণ্ডপে আসিয়া একটি বালিকার বৈধব্যসংঘটনের উল্লেখ করিয়া তাহাকে বলিলেন, তুই এতদিন এত শাস্ত্র