পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झi२८मा ठूका झाश ዓ » w. বাহিরের প্রখর আলোকে অন্ধ, হৃদয়ের অভ্যন্তরস্থ চিরোজিল আলোকের, সাহায্যে ভালমন্দ নির্বাচন করিতে, ও স্বদেশের পক্ষে যাহা স্থায়ী ও যথার্থ মঙ্গল, তাহাই অবলম্বন করিতে শিক্ষা দাও!” রামমোহন রায় যথার্থ কাজ করিয়াছেন। তঁহার সময়ে প্ৰগলভা। রসনার এত শ্ৰীবৃদ্ধি হয় নাই, সুতরাং তাহার এত সমাদরও ছিল না। কিন্তু আর একটা কথা দেখিতে হইবে। এক একটা সময়ে কাজের ভিড় পড়িয়া যায়, কাজের হাট বসিয়া যায়, তখন কাজ করিতে অথবা কাজের ভাণ করিতে একটা আমােদ আছে। তখন সেই কাৰ্য্যাড়ম্বর নাট্যরস জন্মাইয়া মানুষকে মত্ত করিয়া তুলে, বিশেষত একটা তুমুল কোলাহলে সকলে বাহ্যজ্ঞান বিস্মৃত হইয়া একপ্রকার বিহবল হইয়া পড়েন । কিন্তু রামমোহন রায়ের সময়ে বঙ্গসমাজের সে অবস্থা ছিল না । তখন কাজে মত্ততাসুখ ছিল না, একাকী ধীরভাবে সমস্ত কাজ করিতে হইত। সঙ্গিহীন সুগম্ভীর সমুদ্রের গর্ভে যেমন নীরবে অতি ধীরে ধীরে দ্বীপ নিৰ্ম্মিত হইয় উঠে, সঙ্কল্প তেমনি অবিশ্রাম নীরবে: গভীর হৃদয় পরিপূর্ণ করিয়া কাৰ্য্য-আকারে পরিস্ফুট কুইয়া উঠিত। মহত্ত্বের প্রভাবে, হৃদয়ের অনুরাগের প্রভাবে কাজ না করিলে কাজ করিবার আর কোনো প্ৰবৰ্ত্তনাই তখন বৰ্ত্তমান ছিল না । অথচ কাজের ব্যাঘাত এখনকার চেয়ে ঢের বেশি ছিল । রামমোহন রায়ের যশোর প্রলোভন কিছুমাত্র ছিল না। তিনি যতগুলি কাজ করিয়াছিলেন, কোনো কাজেই তাহার সমসাময়িক স্বদেশীয়দিগের নিকট হইতে যশের প্রত্যাশা করেন নাই | নিন্দাগ্নানি শ্রাবণের বারিধারার ন্যায় তাহার মাথার উপরে অবিশ্রাম বর্ষিত হইয়াছে—তবুও তঁহাকে তাহার কাৰ্য্য হইতে বিরত করিতে পারে নাই । নিজের মহত্ত্বে তাহার কি আটল আশ্রয় ছিল, নিজের মহত্ত্বের মধ্যেই তাহার হৃদয়ের কি সম্পূর্ণ পরিতৃপ্তি ছিল, স্বদেশের প্রতি তাহার কি স্বাৰ্থশূন্য সুগভীর প্রেম ছিল। তাহার