পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झाकाgभiठूका तiशु ዓዓ টুকুও শ্রদ্ধা ছিল না। তাহারা কালভৈরবের অনুচর ভূতপ্রেতের ন্যায় শ্মশানের নরকপালে মদিরাপান করিয়া বিকট উল্লাসে উন্মত্ত হইতেন। সে-সময়কার অবস্থা বিবেচনা করিলে তঁহাদের ততটা দোষ দেওয়া যায় না। প্ৰথম বিপ্লবের সময় এইরূপই ঘটিয়া থাকে। একবার ভাঙিবার দিকে মন দিলে প্ৰলয়ের আনন্দ উত্তরোত্তর বাড়িয়া উঠে। সে সময়ে খানিকটা খারাপ লাগিলেই সমস্তটা খারাপ লাগে, বাহিরটা খারাপ লাগিলেই ভিতরটা খারাপ লাগে । কিন্তু বৰ্ত্তমান বঙ্গসমাজে বিপ্লবের আগ্নেয়-উচ্ছাস সর্বপ্রথমে যিনি উৎসারিত করিয়া দিলেন—সেই রামমোহন রায়-তাহার তো এরূপ মত্ততা জন্মে নাই । তিনি তো স্থিরচিত্তে ভালমন্দ সমস্ত পৰ্যবেক্ষণ করিয়াছিলেন। তিনি আলোক জালাইয়া দিলেন, কিন্তু চিতালোক তো জালান নাই। ইহাই রামমোহন রায়ের প্রধান মহত্ত্ব। কেবলমাত্র বাহ অনুষ্ঠান ও জীবনহীন তন্ত্রমন্ত্রের মধ্যে জীবন্তে সমাহিত হিন্দুধৰ্ম্মের পুনরুদ্ধার করিলেন। যে মৃতভারে আচ্ছন্ন হইয়া হিন্দুধৰ্ম্ম দিনদিন অবসন্ন মুমূর্ষু হইয়া পড়িতেছিল, যে জড় পাষাণস্তাপে পিষ্ট হইয়া হিন্দুধর্মের হৃদয় হতচেতন হইয়া পড়িতেছিল, সেই মৃতভার, সেই জুড়ান্তুপে রামমােহন রায় প্রচণ্ড-বলে আঘাত করিলেন, তাহার ভিত্তি কম্পিত হইয়া উঠিল, তাহার। আপাদমস্তক বিদীর্ণ হইয়া গেল। হিন্দুধৰ্ম্মের বিপুলায়তন প্রাচীনমন্দির জীর্ণ হইয়া প্ৰতিদিন ভাঙিয়া পড়িতেছিল, অবশেষে হিন্দুধৰ্ম্মের দেবপ্রতিমা আর দেখা যাইতেছিল না, কেবল মন্দিরেরই কাষ্ঠ-লোষ্ট্ৰ-ধূলিস্তপ অত্যন্ত উচ্চ হইয়া উঠিয়াছিল ; তাহার গর্ভের মধ্যে অন্ধকার ঘনীভূত হইতেছিল, ছোটবড় নানাবিধ সরীসৃপগণ গুহানিৰ্ম্মাণ করিতেছিল, তাহার ইতস্তত প্ৰতিদিন কণ্টকাকীর্ণ গুল্মসকল উদ্ভিন্ন হইয়া সহস্র শিকড়ের দ্বারা নূতন নূতন বন্ধনে সেই পুরাতন ভগ্নাবশেষকে একত্রে বঁাধিয়া রাখিতে চেষ্টা করিতেছিল। হিন্দুসমাজ দেবপ্রতিমাকে ভুলিয়া এই জড়