পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রমাণ করে যেতে হবে আমরা ওদের চেয়ে মানবধর্মে বড়াে—নইলে এতবড়ো বলিষ্ঠের সঙ্গে এমনতরাে হারের খেলা খেলছি কেন। নির্বুদ্ধিতার আত্মঘাতের জন্যে? —আমার কথা ওদের কেউ বােঝেনি তা নয়। কিন্তু কত জনই বা!”

 “তখনও ওদের ছাড়লে না কেন।”

 “আর কি ছাড়তে পারি। তখন যে শাস্তির নিষ্ঠুর জাল সম্পূর্ণ জড়িয়ে এসেছে ওদের চারদিকে। ওদের ইতিহাস নিজে দেখলুম, বুঝতে পেরেছি ওদের মর্মান্তিক বেদনা, সেইজন্যেই রাগই করি আর ঘৃণাই করি, তবু বিপন্নদের ত্যাগ করতে পারিনে। কিন্তু একটা কথা এই অভিজ্ঞতায় সম্পূর্ণ বুঝেছি, গায়ের জোরে আমরা যাদের অত্যন্ত অসমকক্ষ তাদের সঙ্গে গায়ের জোরের মল্লযুদ্ধ করতে চেষ্টা করলে আন্তরিক দুর্গতি শােচনীয় হয়ে ওঠে। রােগ সব শরীরেই দুঃখের কিন্তু ক্ষীণ শরীরে মারাত্মক। মনুষ্যত্বের অপমান করেও কিছুদিনের মতাে জয়ডঙ্কা বাজিয়ে চলতে পারে তারা যাদের আছে বাহুবল, কিন্তু আমরা পারব না। আগাগােড়া কলঙ্কে কালাে হয়ে পরাভবের শেষসীমায় অখ্যাতির অন্ধকারে মিশিয়ে যাব আমরা।”

 “কিছুকাল থেকে এই ভয়ংকর ট্র্যাজেডির চেহারা

১০৫