বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কণ্ঠে, আমার মনের অসীম আকাশে ধ্বনির নীহারিকা সৃষ্টি করে। আর তােমার ওই হাতখানি, ওই আঙুলগুলি, সত্যমিথ্যে সব-কিছুর ’পরে পরশমণি ছুঁইয়ে দিতে পারে। জানিনে, কী মােহের বেগে, ধিক্‌কার দিতে দিতেই নিয়েছি স্খলিত জীবনের অসম্মান। ইতিহাসে পড়েছি এমন বিপত্তির কথা, কিন্তু আমার মতাে বুদ্ধি-অভিমানীর মধ্যে এটা যে ঘটতে পারে কখনাে তা ভাবতে পারতুম না। এবার জাল ছেঁড়বার সময় এল, তাই আজ বলব তােমাকে সত্য কথা, যত কঠোর হক।”

 "বলাে, বলো, যা বলতে হয় বলো। দয়া কোরাে না আমাকে। আমি নির্মম, নির্জীব, আমি মূঢ়—তােমাকে বােঝবার শক্তি আমার কোনােকালে ছিল না। অতুল্য যা তাই এসেছিল হাত বাড়িয়ে আমার কাছে, অযােগ্য আমি, মূল্য দিইনি। বহু ভাগ্যের ধন চিরজন্মের মতো চলে গেল। এর চেয়ে শাস্তি যদি থাকে, দাও শাস্তি।”

 “থাক্, থাক্‌, শাস্তির কথা। ক্ষমাই করব আমি। মৃত্যু যে ক্ষমা করে সেই অসীম ক্ষমা। সেইজন্যেই আজ এসেছি।”

 “সেইজন্যে?”

 “হাঁ কেবলমাত্র সেইজন্যে।”

১১৯