বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একটানা, কেউ নড়বার নাম করে না। আমি ঘন ঘন ঘড়ি দেখছি, ওটা একটা ইঙ্গিত রাতকানাদের কাছে। শেষকালে তোমাকে বললুম, সকাল সকাল তোমার শুতে যাওয়া উচিত, এই সেদিন ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে উঠেছ। —প্রশ্ন উঠল, ‘কটা বেজেছে।’ উত্তর ‘সাড়ে দশটা।’ সভা ভাঙবার দুটো-একটা হাইতোলা গড়িমসি-করা লক্ষণ দেখা গেল। বটু বললে, বসে রইলেন যে অতীনবাবু? চলুন একসঙ্গে যাওয়া যাক। কোথায়? না, মেথরদের বস্‌তিতে; হঠাৎ গিয়ে পড়ে ওদের মদ খাওয়া বন্ধ করতে হবে। সর্বশরীর জ্বলে উঠল। বললুম মদ তো বন্ধ করবে, তার বদলে দেবে কী।— বিষয়টা নিয়ে এতটা উত্তেজিত হবার দরকার ছিল না। ফল হল যারা চলে যাচ্ছিল তারা দাঁড়িয়ে গেল। শুরু হল—আপনি কি তবে বলতে চান—তীব্রস্বরে বলে উঠলুম কিছু বলতে চাইনে। এতটা বেশি ঝাঁজও বেমানান হল। গলা ভারি করে তোমার দিকে আধখানা চোখে চেয়ে বললুম, তবে আজ আসি।― দোতলায় তোমার ঘরের সামনে পর্যন্ত এসে পা চলতে চায় না। কী বুদ্ধি হল বুকের পকেট চাপড়িয়ে বললুম, ফাউণ্টেন পেনটা বুঝি ফেলে এসেছি। বটু বললে, আমিই খুঁজে আনছি—বলেই দ্রুত চলে গেল ছাদে।

১২৪