দু-রকম বুনোনির কাজ। দুটোর মধ্যে মিল নেই। অথচ দুটোই সত্য। তারা নিজেকেও নিজে ভুল করে।”
ভারি গলায় আওয়াজ এল, “কী হে ভায়া।”
“কানাই বুঝি? এসো এসো।”
কানাই গুপ্ত এল ঘরে। বেঁটে মোটা মানুষটি আধবুড়ো।
সপ্তাহখানেক দাড়িগোঁফ কামাবার অবকাশ ছিল না, কণ্টকিত হয়ে উঠেছে মুখমণ্ডল। সামনের মাথায় টাক; ধুতির উপর মোটা খদ্দরের চাদর, ধোবার প্রসাদবঞ্চিত, জামা নেই। হাত দুটো দেহের পরিমাণে খাটো, মনে হয় সর্বদা কাজে উদ্যত, দলের লোকের যথাসম্ভব অন্নসংস্থানের জন্যই কানাইয়ের চায়ের দোকান।
কানাই তার স্বাভাবিক চাপা ভাঙা গলায় বললে, “ভায়া, তোমার খ্যাতি আছে বাক সংযমে, তুমি মুনি বললেই হয়। এলাদি তোমার সেই খ্যাতি বুঝি দিলে মাটি করে।”
ইন্দ্রনাথ হেসে বললে, “কথা না-বলারই সাধনা আমাদের। নিয়মটাকে রক্ষা করবার জন্যেই ব্যতিক্রমের দরকার। এই মেয়েটি নিজে কথা বলে না, অন্যকে কথা বলবার ফাঁক দেয়, বাক্যের ’পরে এ একটি বহুমূল্য আতিথ্য।”
৩২