বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আবদার করব কার কাছে। আমি তা কখনােই করিনে। বৈজ্ঞানিকের নির্মোহ মন নিয়ে মেনে নিই যার মরণদশা সে মরবেই।”

 “তবে!”

 “তবে! দেশের চরম দুরবস্থা আমার মাথা হেঁট করতে পারবে না, আমি তারও অনেক ঊর্ধ্বে —আত্মার অবসাদ ঘটতে দেব না মরবার সমস্ত লক্ষণ দেখেও।”

 “আর আমরা!”

 “তােমরা কি খােকা। মাঝদরিয়ায় যে-জাহাজের তলা গিয়েছে সাত জায়গায় ফাঁক হয়ে, কেঁদে কেটে মন্ত্র পড়ে কর্তার দোহাই পেড়ে তাকে বাঁচাতে পারবে?”

 “না যদি পারি তবে?”

 “তবে কী। তােমরা কজনে জেনে শুনে সেই ডুবােজাহাজেই ঝড়ের মুখে সাংঘাতিক পাল তুলে দিয়েছ, তােমাদের পাঁজর কাঁপেনি। এমন যে-কজনকে পাই ডুবতে ডুবতে তাদের নিয়েই আমাদের জিত। রসাতলে যাবার জন্যে যে-দেশ অন্ধভাবে প্রস্তুত তারি মাস্তুলে তােমরা শেষ পর্যন্ত জয়ধ্বজা উড়িয়েছ, তােমরা না করেছ মিথ্যে আশা, না করেছ কাঙালপনা, না কেঁদেছ নৈরাশ্যে হাউ হাউ করে। তামরা তবু হাল ছাড়নি যখন জলে ভরেছে জাহাজের খােল। হাল ছাড়াতেই কাপুরুষতা―

৪২