পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বেঁধা তােমার মাথার কাপড় মুখের দুই ধারে হাওয়ায় ফুলে উঠেছে। চেষ্টাকৃত অসংকোচের ভান করেই প্রশ্ন করলে, আপনি খদ্দর পরেন না কেন।― মনে পড়ছে?”

 “খুব স্পষ্ট। তােমার মনের ছবিকে তুমি কথা কওয়াতে পার, আমার ছবি বােবা।”

 “আমি আজ সেদিনের পুনরুক্তি করে যাব, তােমাকে শুনতে হবে।”

 “শুনব না তাে কী। সেদিন যেখানে আমার নূতন জীবনের ধুয়াে, পুনঃ পুনঃ সেখানে আমার মন ফিরে আসতে চায়।”

 “তােমার গলার সুরটি শুনেই আমার সর্বশরীর চমকে উঠল, সেই সুর আমার মনের মধ্যে এসে লাগল হঠাৎ আলাের ছটার মতাে; যেন আকাশ থেকে কোন্ এক অপরূপ পাখি ছোঁ মেরে নিয়ে গেল আমার চিরদিনটাকে। অপরিচিতা মেয়েটির অভাবনীয় স্পর্ধায় যদি রাগ করতে পারতুম তাহলে সেদিনকার খেয়াতরী এতবড়াে আঘাটায় পৌঁছিয়ে দিত না—ভদ্রপাড়াতেই শেষ পর্যন্ত দিন কাটত চলতি রাস্তায়। মনটা আর্দ্র দেশালাইকাঠির মতো, রাগের আগুন জ্বলল না। অহংকার আমার স্বভাবের সর্বপ্রধান সদ্‌গুণ, তাই ধাঁ করে মনে হল, মেয়েটি যদি আমাকে বিশেষ ভাবে পছন্দ

৫৩