বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ক্লিষ্টকণ্ঠে এলা বললে, “তুমি ভুললে কেন, অন্তু।”

 “ভােলাবার শক্তি তােমাদের অমােঘ, নইলে ভুলেছি বলে লজ্জা করতুম। আমি হাজারবার করে মানব যে, তুমি আমাকে ভুলাতে পার, যদি না ভুলতুম, সন্দেহ করতুম আমার পৌরুষকে।”

 “তাই যদি হয় তবে আমাকে ভর্ৎসনা করছ কেন।”

 “কেন? সেই কথাটাই বলছি। ভুলিয়ে তুমি সেইখানেই নিয়ে যাও যেখানে তােমার আপন বিশ্ব, আপন অধিকার। দলের লােকের কথার প্রতিধ্বনি করে বললে, জগতে একটিমাত্র কর্তব্যের পথ বেঁধে দিয়েছ তােমরা কজনে। তােমাদের সেই শানবাঁধানাে সরকারি কর্তব্যপথে ঘুর খেয়ে কেবলই ঘুলিয়ে উঠছে আমার জীবনস্রোত।”

 “সরকারি কর্তব্য?”

 “হাঁ। তােমাদের স্বদেশী কর্তব্যের জগন্নাথের রথ। মন্ত্রদাতা বললেন, সকলে মিলে একখানা মােটা দড়ি কাঁধে নিয়ে টানতে থাকো দুই চক্ষু বুজে—এই একমাত্র কাজ। হাজার হাজার ছেলে কোমর বেঁধে ধরল দড়ি। কত পড়ল চাকার তলায়, কত হল চিরজন্মের মতাে পঙ্গু। এমন সময়ে লাগল মন্ত্র উল্‌টোরথের যাত্রায়। ফিরল রথ। যাদের হাড় ভেঙেছে তাদের হাড় জোড়া

৭০