বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাঁজরের হাড় টনটন করে উঠত; তোমাকে ভাববার সময় দিতুম না, কাঁদবার মতো নিশ্বাস তোমার বাকি থাকত না, নিষ্ঠুরের মতো টেনে নিয়ে যেতুম আপন কক্ষপথে। আজ যে-পথে এসে পড়েছি এ-পথ ক্ষুরধারার মতো সংকীর্ণ, এখানে দুজনে পাশাপাশি চলবার জায়গা নেই।”

 “দস্যু আমার, কেড়ে নিতে হবে না গো, নাও, এই নাও, এই নাও।” এই বলে দু-হাত বাড়িয়ে গেল অতীনের কাছে, চোখ বুজে তার বুকের উপর পড়ে তার মুখের দিকে মুখ তুলে ধরলে।

 জানালা থেকে এলা রাস্তার দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বলে উঠল, “সর্বনাশ। ওই দেখতে পাচ্ছ?”

 “কী বলো দেখি।”

 “ওই যে রাস্তার মোড়ে। নিশ্চয়ই বটু—এখানেই আসছে।”

 “আসবার যোগ্য জায়গা সে চেনে।”

 “ওকে দেখলে আমার সমস্ত শরীর সংকুচিত হয়ে ওঠে। ওর স্বভাবে অনেকখানি মাংস অনেকখানি ক্লেদ। যত চেষ্টা করি পাশ কাটিয়ে চলতে, ওকে দূরে ঠেকিয়ে রাখতে, ততই ও কাছে এসে পড়ে। অশুচি, অশুচি ওই মানুষটা।”

৭৫