পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্রনাথ এই গ্রন্থের ‘মুখবন্ধ' লিখিয়া দিয়াছিলেন— ‘প্রিয়নাথ সেনের সঙ্গে আমার নিকটসম্বন্ধ ছিল। নিজের কাছ থেকে দূরে বাহিরে স্থাপন করে তার কথা সমালোচনা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয় । তার যে-সব লেখা এই বইয়ে সংগ্রহ করা হয়েছে, তার অনেকগুলিই আমার রচনা নিয়ে । আমি জানি তার কারণটি কত স্বাভাবিক । বাংলাসাহিত্যে যখন আমি তরুণ লেখক, আমার লেখনী নূতন নূতন কাব্যরূপের সন্ধানে আপন পথ রচনায় প্রবৃত্ত, তখন তীব্র এবং নিরস্তর প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তাকে চলতে হয়েছে । সেই সময়ে প্রিয়নাথ সেন অকৃত্রিম অনুরাগের সঙ্গে আমার সাহিত্যিক অধ্যবসায়কে নিত্যই অভিনন্দিত করেছেন । তিনি বয়সে এবং সাহিত্যের অভিজ্ঞতায় আমার চেয়ে অনেক প্রবীণ ছিলেন । নানা ভাষায় ছিল তার অধিকার, নানা দেশের নানা শ্রেষ্ঠ সাহিত্যের অবারিত আতিথ্যে র্তার সাহিত্যরসসম্ভোগ প্রতিদিনই প্রচুরভাবে পরিতৃপ্ত হত। সেদিন আমার লেখা র্তার নিত্য আলোচনার বিষয় ছিল । তার সেই ঔৎসুক্য আমার কাছে যে কত মূল্যবান ছিল সে কথা বলা বাহুল্য। তার পর অনেক দিন গেল কেটে, বাংলাসাহিত্যের অনেক পরিণতি ও পরিবর্তন ঘটল— পাঠকদের মানসিক আবহাওয়ারও অনেক বদল হয়েছে। বোধ করি আমার রচনাও সেদিনকার ঘাট পেরিয়ে আজ এসেছে অনেক দূরে । প্রিয়নাথ সেনের এই প্রবন্ধগুলিকে সেই দূরের থেকে আজ দেখছি। সেদিনকার অপেক্ষাকৃত নির্জন সাহিত্যসমাজে, শুধু আমার নয়, সমস্ত দেশের কিশোরবয়স্ক মনের বিকাশস্মৃতি এই বইয়ের মধ্যে উপলব্ধি করছি । বৎসর গণনা করলে খুব বেশিদিনের কথা হবে না, কিন্তু কালের বেগ সৰ্ব্বত্রই হঠাৎ অত্যন্ত দ্রুত হয়ে উঠেছে, তাই অদূরবর্তী সামনের জিনিষ পিছিয়ে পড়ছে দেখতে দেখতে, নিজেরই জীবিতকালের মধ্যে যুগান্তরের טיילא