পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিন্তু রাণুর জন্মতারিখটি সময়মত না পাওয়ায় তাকে সময়মত আমার আশীৰ্বাদ পাঠানো হল না। একখানা গীতপঞ্চাশিকা পাঠিয়েছিলুম কিন্তু সেটা তোমার জন্মদিন লক্ষ্য করে নয়। পশুদিন চিঠিতে তোমার জন্মোৎসবের আভাস পেয়ে তখনই হাতের কাছে একখানা ওড়না ছিল সেইটে পাঠালুম। এই ওড়নাতে একটুখানি সোনালি আঁচলা এবং পাড় কাছে যে আশীৰ্ব্বাদলিপিটি রেখে চলে যায় এই সোনালি পাড় দেওয়া ওড়নায় তোমাকে সেই কথাটি মনে করিয়ে দেবে। মাথার উপর দিয়ে এই ওড়নাটি যখন পরবে তখন তোমার ভানুদাদার আশীৰ্ব্বাদের কিরণলেখা তোমার ললাট স্পর্শ করবে। এই কাপড়খানি একটি রূপক মাত্র— এ হারাতে পারে, ছিড়তে পারে, মলিন হতে পারে— কিন্তু আমার একান্ত কামনা এই যে, আমার অস্তরের আশীৰ্ব্বাদ তোমাকে বেষ্টন করে তোমাকে সুন্দর করে তুলুক, সংসারের সমস্ত ধুলিসংসর্গ হতে তোমাকে নিৰ্ম্মল করে আবৃত করুক, তোমাকে সংযত করুক, সম্বত করুক, তোমাকে ধৈর্য্যে, বীৰ্য্যে, মাধুর্যে ও কল্যাণে ভূষিত করুক। অস্তরের মধ্যে মঙ্গলের যে 'সুন্দর রূপে বিকশিত দেখতে ইচ্ছা করে— সেই জন্যে ভানুদাদা উৎসুক দৃষ্টিতে রাণুর দিকে তাকিয়ে থাকবে, দেখবে তার চিত্তটি প্রতিদিন শিশিরক্ষাত পূজার ফুলটির মত ধীরে ধীরে আলোকের দিকে অসীমের দিকে ফুটে উঠে আপনার অন্তরের স্নিগ্ধ সৌগন্ধাকে উৎসর্গ করচে। ইতি ২২ কাৰ্ত্তিক ১৩২৫ তোমার ভানুদাদা