পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 [ডিসেম্বর ১৯১৮] { শাস্তিনিকেতন ] কল্যাণীয়াসু রাণু, আজ দুপুর বেলা যখন খেতে বসেছি, এমন সময়ে— রোসো আগে বলে নিই কি খাচ্ছিলুম। খুব প্রকাণ্ড মোটা একটা রুটি— কিন্তু মনে কোরো না তার সবটাই আমি খাচ্ছিলুম— রুটিটাকে যদি পূর্ণিমার চাদ বলে ধরে নেও তাহলে আমার টুকরোটি দ্বিতীয়ার চাদের চেয়ে বড় হবে না, সেই রুটির সঙ্গে কিছু ডাল ছিল, আর ছিল চাটনি— আর একটা তরকারিও ছিল। যা হোক বসে বসে রুটি চিবচ্চি এমন সময়ে— রোসো আগে বলে নিই রুটি ডাল চাটনি এল কোথা থেকে? তুমি বোধ হয় জানো আমার এখানে প্রায় পাঁচশ জন গুজরাটি ছেলে আছে— আমাকে খাওয়াবে বলে তাদের হঠাৎ ইচ্ছা হয়েছিল। তাই আজ সকালে আমার লেখা সেরে স্নানের ঘরের দিকে যখন চলেচি এমন সময়ে দেখি একটি গুজরাটি ছেলে থালা হাতে করে আমার দ্বারে এসে হাজির। যা হোক, নীচের ঘরে টেবিলে বসে বসে রুটির টুকরো ভাঙচি আর খাচ্চি, আর তার সঙ্গে একটু একটু করে চাটুনিও মুখে দিচ্চি এমন সময়ে— রোসো, আগে বলে নিই খাবার কি রকম হয়েছিল। রুটিটা বেশ শক্ত গোছের ছিল— যদি আমাকে সম্পূর্ণ চিবিয়ে সবটা খেতে হত তাহলে আমার একলার শক্তিতে কুলিয়ে উঠত না, মজুর ডাকতে হত। কিন্তু ছিড়তে যত শক্ত মুখের মধ্যে ততটা নয়— আবার রুটিটা মিষ্টি ছিল। ডাল তরকারি দিয়ে মিষ্টি রুটি খাওয়া আমাদের আইনে লেখে না কিন্তু খেয়ে দেখা গেল যে, খেলে যে বিশেষ অপরাধ হয় তা নয়। সেই রুটি খাচ্চি ঠিক এমন সময়ে— রোসো, ওর মধ্যে একটা কথা বলতে একেবারেই ভুলে X > O