পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গেছি। দুটো পাপর ভাজাও ছিল। সে দুটো, আমি যাকে বলে থাকি সুশ্রাব্য— অর্থাৎ খেতে বেশ ভাল লাগে। শুনে তুমি হয় ত আশ্চৰ্য্য হবে এবং আমাকে হয় ত মনে মনে পেটুক ঠাউরে রেখে দেবে— এবং যখন আমি কাশীতে যাব তখন হয় ত সকালে বিকালে আমাকে চাটনি দিয়ে কেবলি পাঁপর ভাজা খাওয়াবে— তবু সত্য গোপন করব না, দু খানা পাপর ভাজা সম্পূর্ণই খেয়েছিলুম। যা হোক সেই পাঁপর মচ্মচ্ শব্দে খাচ্চি এমন সময়ে— রোসো মনে করে দেখি সে সময়ে কে উপস্থিত ছিল। তুমি ভাবচ তোমার বউমা তোমার ভানুদাদার পাঁপর ভাজা খাওয়া দেখে অবাক হয়ে হতবুদ্ধি হয়ে টেবিলের এক কোণে বসে মনে মনে ঠাকুর দেবতার নাম করছিলেন, তা নয়— তিনি তখন কোথায় আমি জানি নে— আর কমল ? সেও যে তখন কোথায় বসে রোদ পোয়াচ্ছিল তা আমি জানি নে। তাহলে দেখচি টেবিলে আমি একলা ছাড়া কেউই ছিল না। যাই হোক দুখানা পাপর ভাজার পরে প্রায় শিকি টুকরো রুটির পৌনে চার আনা যখন শেষ করেছি— এমন সময়ে— হা হা একটা কথা বলতে ভুলে গেছি— আমি লিখেচি খাবার সময় কেউ ছিল না, কথাটা সত্য নয়। ভোদা কুকুরটা একদৃষ্টে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে লালায়িত জিহ্বায় চিন্তা করছিল, যে, আমি যদি মানুষ হতুম তাহলে সকাল থেকে রাত্তির পর্যন্ত ঐ রকম মুচ্‌মুচ্‌ মুচ্‌মুচ মুচ্‌মুচ্ করে কেবলি পাপর ভাজা খেতুম, ইতিহাসও পড়তুম না, ভূগোলও পড়তুম না— শিশুমহাভারত চারুপাঠের কোনো ধার ধারতুম না। যা হোক যখন দুখানা পাপর ভাজা এবং কিছু রুটি ও চাটনি খেয়েছি এমন সময়ে— কিন্তু ডালটা খাইনি— সেটা নারকোল দিয়ে এবং অনেকখানি কুয়োর বেশি ছিল— আর তরকারিটাও খাইনি— কেননা আমি মোটের উপর তরকারি প্রভৃতি বড় বেশি খাইনে— যাই হোক যখন রুটি এবং পাপর X > X