পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

لا وثا {৯ অক্টোবর ১৯১৯} { কলকাতা} কল্যাণীয়াসু রাণু, তোমাকে পরে পরে দুদিন ধরে দুখানি চিঠি লিখলুম তার কোনো হিসেব পাওয়া গেলনা কেন ? এতদিন নিশ্চয় পেয়েচ। কিন্তু আমার খুবই ইচ্ছে ছিল ছুটির কয়দিন আশ্রমে নির্জন বাস করব— কিন্তু আমার সেই মাঠের বাড়ি— যাকে আমি বলি রবির উত্তরায়ণ – সেটা এখনও অতিথির অধিকারে। সুদীর্ঘকালেও তাকে বিচলিত করতে পারা গেল না— অবশেষে আমাকেই বিচলিত হতে হল। তার পরে এবার আশ্রমে প্রাক্তন ছাত্র অনেকে এসে জুটেচে। তারা ক্ষণে ক্ষণে আমাকে বেষ্টন করে ধরত। বেশ স্পষ্ট বুঝতে পারা গেল আমার ভাগ্যে ওখানে অবকাশ নেই। আমার জ্যোতিষ্ক মিতাটি আকাশ নইলে বিচরণ করতে পারেন না— তারি নামধারী আমি অবকাশ নইলে টিকতে পারি নে— আমার যদি কোনো আলো থাকে তবে সেই আলো প্রচুর অবকাশের মধ্যেই প্রকাশ পায়— সেই জন্যেই আমি ছুটির দরবার করি— কেননা ছুটিতেই আমার যথার্থ কাজ। তাই লোকসমাগম দেখে আমি আশ্রম ছেড়ে দৌড় দিয়েচি। অথচ ঠিক এই সময়েই উজ্জ্বল সূর্যের আলোয়, রঙীন মেঘের ঘটায়, ঘাসে ঘাসে মেঠো ফুলের প্রাচুর্য্যে, হাওয়ায় হাওয়ায় শিউলিফুলের গন্ধে ক্ষেত ভরে কাচা ধানের শ্যামলতায়, দিকে দিকে দিকে যখন গাড়ি চলেছিল তখন পিছনের দিকে মন টনছিল। কিন্তু ষ্টেশনে ঢং ঢং করে ঘণ্টা বাজল আর রেলগাড়িটা আমাদের আশ্রমকে যেন টিটকারি দিয়ে পো করে বাঁশি বাজিয়ে আমাকে টেনে নিয়ে চলে এল। রাত এগারোটায় হাওড়ায় উপস্থিত। এসে শুনি হাওড়ার ব্রিজ খুলে দিয়েচে। У 8 o