পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যাপন করতে হবে তারি সন্ধানে আমাদের মোটরে চড়ে গৌহাটি সহরের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়া গেল। কিছু দূরে গিয়ে দেখি আমাদের গাড়িটা হঠাৎ ন যযৌ ন তস্থেী। বোঝা গেল আমাদের ভাগ্যদেবতা বিনা অনুমতিতে আমাদের এ গাড়িতেও চড়ে বসেচেন, - তিনিই আমাদের কলের প্রতি কটাক্ষপাত করতেই সে বিকল হয়েচে । অনেক যত্নে যখন তাকে একটা মোটর গাড়ির কারখানায় নিয়ে যাওয়া গেল তখন সূৰ্য্যদেব অস্তমিত। কারখানার লোকেরা বললে “আজ কিছু করা অসম্ভব কাল চেষ্টা দেখা যাবে।" আমরা জিজ্ঞাসা করলুম রাত্রে আশ্রয় পাই কোথায় ? তারা বল্লে ডাকবাংলায়। ডাকবাংলায় গিয়ে দেখি সেখানে লোকের ভিড়– একটিমাত্র ছোট ঘর খালি তাতে আমাদের পাঁচজনকে পূরলে পঞ্চত সুনিশ্চিত। সেখান থেকে সন্ধান করে অবশেষে গোয়ালন্দগামী ষ্টীমারঘাটে একটা জাহাজে আশ্রয় নেওয়া গেল । সেখানে প্রায় সমস্ত রাত বৌমা এবং কমলের ঘোরতর কাশি আর হাঁপানি— রাতটা এই রকম দুঃখে কাটল। পরদিনে প্রভাতে আকাশে ঘন মেঘ করে বৃষ্টি হতে লাগল। কথা আছে সকাল সাড়ে সাতটার সময় মোটর কোম্পানির একটি মোটর গাড়ি এসে আমাদের বহন করে পাহাড়ে নিয়ে যাবে। সে গাড়িখানা আর একজন আর এক জায়গায় নিয়ে যাবে বলে ঠিক করে রেখেছিল— সেখানা না পেলে দুঃখ আরো নিবিড়তর হবে তাই রথী গিয়ে নানা লোকের কাছে নানা কাকুতি মিনতি করে সেটা ঠিক করে এসেচেন— ভাড়া লাগবে একশো পাঁচশ টাকা— আমাদের সেই হাতী কেনার চেয়ে বেশি। যা হোক পৌনে আটটার সময় গাড়ি এল— তখন বৃষ্টি থেমেচে । গাড়ি ত বায়ুবেগে চলল, কিছু দূরে গিয়ে দেখি, একখানা বড় মোটরের মালগাড়ি ভগ্নঅবস্থায় পথপাশ্বে নিশ্চল হয়ে আছে– পূৰ্ব্বদিনে আমাদের জিনিসপত্র এবং সাধুচরণকে নিয়ে এই গাড়ি রওনা হয়েছিল— এই পৰ্য্যন্ত এসে তিনি ভন্ধ হয়েচেন— জিনিস তার মধ্যেই আছে, সাধু ভাগ্যক্রমে একটা প্যাসেঞ্জার গাড়ি পেয়ে চলে >8○