পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গিয়েচে । আজ এই সকালে উজ্জ্বল রৌদ্রালোকে চারিদিক প্রসন্ন। মোটা মোটা গোটাকতক মেঘ পাহাড়ের গা আঁকড়ে ধরে চুপচাপ রোদ পোহাচ্চে— তাদের এমনি বেজায় কুঁড়ে রকমের চেহারা যে শীঘ্র তারা বৃষ্টি বর্ষণে লাগবে এমন মনেই হয় না। আমার এখানকার লেখবার ঘরের সঙ্গে শাস্তিনিকেতনের সেই কোণটার কোনো তুলনাই হয় না। বেশ বড় ঘর-– নানা রকমের চৌকি টেবিল সোফা আরামকেদারায় আকীর্ণ— জানলাগুলো সমস্তই শাসির— তার ভিতর থেকে দেখতে পাচ্চি দেওদার গাছগুলো লম্বা হয়ে দাড়িয়ে উঠে বাতাসে মাথা নেড়ে নেড়ে আকাশের মেঘের সঙ্গে ইসারায় কথা বলবার চেষ্টা করচে। বাগানে ফুলগাছের চানকায় কত রঙ বেরঙের ফুল যে ফুটেচে তার ঠিক নেই– কত চামেলি কত চন্দ্রমল্লিকা কত গোলাপ— আরো কত অজ্ঞাতকুলশীল ফুল। আমি ভোরে সূর্য ওঠবার আগেই রাস্তার দুই ধারের সেই সব ফোটা ফুলের মাঝখান দেখে একটুও ভয় পায় না— হাসাহাসি করে— বোধ হয় যেন তারা আমার “ভানুদাদা" নামটা জানে— আর জানে আমার বয়েস খুব অল্প— আর বোধ হয় যেন তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করে “তোমার বেীমা কেন তোমাকে আমাদের মত নানা রঙের কাপড়ে সাজিয়ে বেড়াতে/পাঠান না।" আমি আমার সেই শালের কাপড়টা পরে বেড়াই তার একটা রঙ আছে বটে— কিন্তু সে রঙটা যে কি বলা শক্ত— রঙ আর না-রঙের মাঝামাঝি। এই পর্যন্ত লিখেচি এমন সময়ে সাধু এসে খবর দিলে স্নানের জল তৈরি— আমনি কলম রেখে চৌকি ছেড়ে রবিঠাকুর দ্রুতপদবিক্ষেপে স্নান যাত্রায় গমন করলেন। স্নান করে বেরিয়ে এসে খবর পাওয়া গেল— কি খবর বল দেখি ? আন্দাজ করে দেখ। নিজে যদি ভেবে না পাও আশাকে শাস্তিকে জিজ্ঞাসা কর। খবর পাওয়া গেল যে রবিঠাকুরের ভোগ প্রস্তুত— শ্রীযুক্ত তুলসী নামক উৎকলবাসী পাচকের স্বহন্ডে পাক করা। আহার S 8 & >br > ○