পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وئ وV ১১ ডিসেম্বর ১৯১৯ [শান্তিনিকেতন] কল্যাণীয়াসু কিছুকাল থেকে খুব ব্যস্ত থাকতে হয়েচে। সকালে নানা লেখা লিখতে হয়। সমস্ত দুপুর বেলায় চিঠির উত্তর। সন্ধ্যাবেলায় ক্লাস। বাইরে একটু বেড়াতে যাবারও সময় পাইনে। একটা সুবিধা এই যে এখন মাঠের মধ্যে যে জায়গায় বাসা নিয়েচি এখানে বসে বসেই বেড়ানো চলে। চারদিকেই খোলা আকাশ, খোলা মাঠ। কিন্তু চোখ দুটোকে ত লেখবার কাগজের থেকে ছুটি দেওয়া চাই নইলে সে কেবলি কালো অক্ষরগুলোর মধ্যে ঘুরে ঘুরে মরে— মাটিতে মটর ছড়িয়ে দিলে পায়রা যে রকম মাথা হেট করে ঠুকরে ঠক্‌রে বেড়ায়। থেকে থেকে ইচ্ছে করে— উত্তরে হাওয়ায় আজকাল যেমন গাছের শুকনো পাতা সব উড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যাচ্চে তেমনি করেই সমস্ত কাগজপত্র আকাশে উড়িয়ে দিই— কাজকৰ্ম্ম সব বন্ধ করে দিয়ে বারান্দাটাতে পা ছড়িয়ে দিয়ে বসে দুটো চক্ষুকে নীল দিগন্তে বিবাগী করে পাঠিয়ে দিই। কিন্তু কাজ আমার ঘাড়ে চড়ে ঝুঁটি ধরে বসেচে— তাকে যতই নাড়া দিই সেই ঝাকানি আমার নিজের ঘাড়েই পড়ে— শেষকালে বলতে হয়, “আচ্ছা রে বাপু, আমার দুটি স্কন্ধ তোমাকেই উৎসর্গ করে দিলুম, তোমার গুরুভারে আমার মস্তক ডেস্কের উপর ঝুঁকে পড়ুক আমার মেরুদণ্ড ধনুকের মত বেঁকে যাক, আমার জীবনের দণ্ডপল মুহূৰ্ত্তগুলো জাতায় পেষা ময়দার মত চূর্ণ হয়ে গিয়ে বস্তাবন্দী আকারে কাজের হাটে চালান হতে থাক।” এই মাত্র তোমাকে চিঠি লিখতে লিখতে আমার দুটি ছাত্র এসে উপস্থিত, ঘণ্টা খানেক ধরে তাদের ইংরেজি শেখালুম। তার পরে পুনশ্চ চিঠিতে হাত দিলুম। তোমার >8。