পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> D8 ৪ সেপ্টেম্বর ১৯২ [ শাস্তিনিকেতন] কল্যাণীয়াসু, তুমি যে তোমার লজিকের খাতার পাতা ছিড়ে আমাকে চিঠি লিখেচ তাতে বুঝতে পরিচি লজিক সম্বন্ধে আলোচনা পড়ে তোমার উপকার হয়েচে । লজিক যেমনি পড়া হয়ে যায় আমনি তার আর কোনো প্রয়োজন থাকে না— যে-কলাপাতায় খাওয়া হয়ে যায় সে কলাপাতা ফেলে দিলে ক্ষতি হয় না; কিন্তু যে তালপাতার উপর মেঘদূত লেখা হয়েচে সেটা ফেলবার জিনিষ নয়। আমরা এবার দুতিন দিন ধরে বর্ষামঙ্গল করেচি। তার ফল কি হয়েচে একবার দেখ। আজ ভাদ্রমাসের আঠারই তারিখ, অর্থাৎ শরৎকালের আরম্ভ। কিন্তু বর্ষার আয়োজন এখনো ভরপুর রয়েচে । আকাশ ঘন মেঘে কালো হয়ে আছে– থেকে থেকে ঝমাঝম বৃষ্টি হচ্চে। আমার কবিত্বের এই আশ্চর্য প্রভাব দেখে আমি নিজেই অবাক হয়ে গেছি। এমন কি, শুনতে পাই, আমার এই বর্ষামঙ্গলের জোর তোমার সেই কাশী পর্যন্ত পোঁচেছে। সেখানেও বৃষ্টি চলচে। বোধ হচ্চে আমরা যখন শারদোৎসব করব তার পর থেকেই শরতের আরম্ভ হবে। এই শারদোৎসবের রিহার্সালে আমাকে অস্থির করেচে। রোজ দুপুরবেলায় বিভূতি’ এসে একবার করে আমার কাছ থেকে আগাগোড়া পাঠ নিয়ে যায়-– ছোট ছেলেরা যে রকম পড়া মুখস্থ করে আমাকে তাই করতে হয়। কিন্তু এমনি আমার বুদ্ধি তবু রিহার্সালের সময় কেবল ভুলি— ছোট ছোট ছেলেগুলো পৰ্যন্ত হাসে— এত অপমান, সে আর কি বলব। যাই হোক যদি তুমি এবার শারদোৎসব দেখতে আস তাহলে বোধ হয় দেখবে ঠিক ঠিক মুখস্থ বলে যাচ্চি। >>>