পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SHO ৯ ১০ জানুয়ারি ১৯২৪ [শাস্তিনিকেতন] রাণু এবারে ছোট্ট চিঠি লিখব। কেননা শীঘ্রই চিঠির খনিসুদ্ধ তোমার ওখানে গিয়ে পৌঁছবে। শুধু বিশল্যকরণী নয় স্বয়ং গন্ধমাদন গিয়ে উপস্থিত হবে। নিশ্চয়ই এতক্ষণে বিদ্যুম্বাহিনী বাৰ্ত্তা তোমার কানে গিয়ে পোঁচেছে যে হিন্দুবিশ্ববিদ্যালয় ভানুকে তার পূৰ্ব্ব দিকপ্রান্ত হতে আমন্ত্রণ করে নিয়ে যাচ্চে। তুমি বোধ হয় পুরাণে পড়েচ ভানুর রথ হচ্চে একচক্র রথ। এই একচক্র রথেই তার দিন চলে। মৰ্ত্তে এসেও ভানু আবিষ্কার করেচেন যে স্বর্ণময় একচক্র রথ না হলে তার দিন চলে না। মাঝে মাঝে মৰ্ত্ত্যলোকের এই একচক্র ভেঙে গিয়ে তার গতিবিধি আচল হয়ে ওঠে— তখন তিনি মনের দুঃখে স্বৰ্গপ্রাপ্তি কামনা করেন। বৰ্ত্তমানে এই একচক্রের অভাবজনিত দুঃখে ভানুকে পীড়া দিচ্চে, তার সকল কাজই খুঁড়িয়ে চলচে, তার রিক্ত কর দেখে দেবতারা লজ্জা বোধ করচেন— কারণ এতে তার নাম রক্ষা হচ্চে না। সম্প্রতি কাশীর দিকে স্বর্ণচক্রের একটা আওয়াজ শোনা যাচ্চে, তাই লৌহচক্র্যানে ভানু তদভিমুখে যেতে উৎসুক। এর থেকে মনে কোরো না ভানুর মনে আর কোনো চক্রান্ত নেই। কিন্তু মনের কথা অনুমানে বুঝে নিতে হবে। সোনার চাকার কথা ঘর্ঘর ধ্বনি করতে সঙ্কোচ বোধ করে না— কিন্তু চক্রবাকের বাণী অন্ধকার রাত্রে নির্জন নদীপার থেকে কদাচিৎ শুনতে পাওয়া যায়। ইতি বোধ হয় ২৩শে কিম্বা ২৪শে পৌষ ১৩৩০ ভানুদাদা ২৩৪