পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বভাব সম্বন্ধে তোমার মনে নিশ্চয়ই অনেক বিতর্ক উপস্থিত হয়েচে । তার পিতৃদত্ত নাম বনমালী। কিন্তু হঠাৎ এক সময়ে শোনা গেল তোমার পিতা তাকে নীলমণি বলে সম্ভাষণ করলেন। আমার মনে হল তোমার পিতৃদত্ত নামটি তার মুখচ্ছবির সঙ্গে সুন্দর খাপ খায়। সেই অবধি আপোষে আমাদের নিজেদের মধ্যে তাকে লীলমণি বলেই আখ্যা দিয়েচি। যাক কলকাতায় এসে পৌঁছন গেল। এসে দেখা গেল পরদিনেই এগারই মাঘ। আমি জন্মকালে ব্রাহ্ম ছিলুম। কিন্তু যেমন আমি কোনো ইস্কুলের পড়া স্বীকার পারলুম না। সেই কারণে আমি সাম্প্রদায়িক উৎসবে যোগ দিতে পারি নে। স্থির করা গেল, জোড়াসাঁকোয় না থেকে আলিপুরে দুটো দিন অজ্ঞাতবাস যাপন করেই শান্তিনিকেতনে দৌড় মারব। প্রশাস্তকে টেলিফোন করা গেল। প্রশান্ত বললে “তথাস্তু, আজ রাত্রে গিয়ে মোটর রথে করে আলিপুরে নিয়ে আসব।” বৌমার সঙ্কল্প হল তিনি সেই অপরাহুেই তার কাঠের পুতুল আর কাশীর পেয়ারার বৃহৎ ঝুড়ি নিয়ে বোলপুরে যাত্রা করবেন। আমাদের সম্পত্তি যা কিছু ছিল দুই ভাগ হল। এক ভাগ যাবে আশ্রমে, একভাগ যাবে আলিপুরে। এমন সময় কি হল সেকথা লিখতে গেলে কিছুতে আজকের ডাক পাওয়া যাবেনা। অথচ আমি নিশ্চয় জানি তুমি প্রতিদিন ডাকের অপেক্ষা করচ আর ভাবচ “ভানুদাদা নিষ্ঠুর কঠিন।” তাই অনতিবিলম্বে এই চিঠি রওনা করে দিচ্চি গল্পের অবশিষ্ট অংশ পরের কিস্তিতে সমাপ্য।" ইতি ৩০শে জানুয়ারী ১৯২৪ । এ চিঠি কবে পেলে ঠিক করে দেখো ত । তোমার ভানুদাদা ২৩৭