পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অস্বীকার করা চলবে না। এতক্ষণ তোমার সঙ্গে হাসি তামাসা করেচি এখন একটু গম্ভীর হতে হবে। ইচ্ছে করেনা গভীর হয়ে তোমার মনকে নাড়া দিতে— কিন্তু অত্যন্ত আবশ্যক বলেই তোমাকে বলচি। তোমার একটা কথা বিশেষ জানা উচিত যে তোমার সম্বন্ধে বুড়োদের” বাড়িতে কুশ্রীরকম অপমানজনক কথাবাৰ্ত্তা চলচে। এমন একটা অবস্থায় এসে ঠেকেচে যে তোমার সঙ্গে বুড়োর বিবাহ কোনোমতেই সম্ভবপর নয়। অথচ তুমি এখনো যদি বুড়োকে চিঠি লেখ তাহলে কেবল যে তোমারই আত্মসম্মানের হানি হবে তা নয় তোমার বাপ মায়ের প্রতি অবমাননা টেনে আনবে। আমি গোপনে বলচি তোমার সম্বন্ধে তোমার বাবাকে অপমান করতে বুড়োর বাড়ি থেকে আর একটু হলে চেষ্টা করা হচ্ছিল এ সত্ত্বেও যদি তুমি বুড়োকে চিঠি লিখতে না ছাড়ো তাহলে তাকেও তুমি বিপদে ফেলবে, নিজেদেরও অপমানিত করবে, আর তা ছাড়া এতে আমারও খুব লাঞ্ছনা হবে। আমার সম্বন্ধেও ওদের বাড়িতে আলোচনা চলচে তুমি যদি এখনো আত্মসংবরণ করতে না পার তাহলে আমার পক্ষেও গুরুতর লজ্জার কারণ হবে। অবশ্য জানি, আমি না বুঝে গোড়াতে প্রশ্রয় দিয়েচি— সেটা আমার গভীর বেদনা ও অনুশোচনার বিষয় হয়ে রয়েচে। অনেকটা পরিমাণে আমারই উৎসাহে যখন বুড়োর প্রতি তোমার হৃদয় আবদ্ধ হয়ে পড়েচে, তখন হঠাৎ সেদিক থেকে তোমার ভালোবাসা প্রত্যাহরণ করতে বললেই যে অমনি তখনি সেটা সুসাধ্য হবে এটা আশা করাই যায় না। কিন্তু ভালোবাসারও ত একটা আত্মসম্মান এবং একটা দায়িত্ব আছে। বুড়োকে যখন তুমি ভালোবাসো তখন বুড়োর কল্যাণের কথাও ত তোমার ভাবা উচিত।" [১ ২ ফাল্গুন ১৩৩০] [স্বাক্ষরহীন। অসম্পূর্ণ?] ૨૯ ૨