পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার দেহখানা ক্রমেই পেকে উঠচে, আর খানিক বাদেই ফাটতে আরম্ভ করবে। * উপরে চলে এসেছি। সিড়ির কাছে এক কোণে একটা চিঠি লেখবার ডেস্ক আর কাগজ কলমের ব্যবস্থা আছে। মনে করলুম রাণুর সঙ্গে একটু গল্প করে আসি। কিন্তু লিখে লিখে মাথাটা ক্লাস্ত আর ঘেমে ঘেমে শরীরটা অবসন্ন গায়ে খানিকটা ওডিকলোন মেখে এসেচি কিন্তু তার গন্ধ তোমার বেনারসের পড়বার ঘরে পৌছবেনা। আজ বোধ হচ্চে আটাশে কিম্বা উনত্রিশে। এখন নিশ্চয় কলেজের ক্লাসে তোমাকে যেতে হয়না। ঘরে বসেই ত্রিকোণমিতি অভ্যাস করতে লেগে গেছ। এখানে এখন বেলা পাঁচটা— সেখানে হয় ত দুপুর কিম্বা একটা হবে। আমাদের সঙ্গে এই জাহাজে সেই বেহালার ওস্তাদ প্রেমিসলাভ এবং তার স্ত্রী যাচ্ছেন। ওদের সঙ্গে আমাদের খুব জমেচে। আরও অনেক নরনারী আছে কিন্তু তারা যেন সমুদ্রের ওপারে আছে বলে মনে হয়। মাঝে মাঝে সকালে বিকালে একটুখানি মাথা-নাড়ানাড়ি এবং গুড় মৰ্ণিং গুড় আফটারনুন চলে। * রেঙ্গুনে কয়দিন খুবই ধুমধাম গোলমাল হাততালি ইত্যাদি চলেছিল। আসবার আগের দিন একটি চীনের মেয়ের সঙ্গে আলাপ হল । সে পিকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার ইচ্ছে বিশ্বভারতীতে গিয়ে অন্তত একবছর থেকে আমার কাছে সাহিত্য অধ্যয়ন করে। এই অল্প সময়টুকুর মধ্যে সে আমার সঙ্গে এত ভাব করে নিলে যে আশ্চৰ্য্য হয়ে গেছি। ঘাটে এসে দেখি, সেখানে সে উপস্থিত। জাহাজ ছিল মাঝনদীতে কিছু দূরে। একটা ছোট স্টীমারে সব যাত্রীদের সেখানে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা ছিল। মেয়েটিও সেই জাহাজে উঠে পড়ল। আমার হাত চেপে ধরে বল্লে, আপনি চলে যাচ্চেন, আমার কষ্ট হচ্চে,— ফিরে এলে যেন আপনাকে দেখতে পাই। যখন ছোট জাহাজ আমাদের জাহাজে এসে পৌছল, আমি বল্লুম, এবার ኟግ >