পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উল্টো— কথার টেম্পেরেচর ক্রমেই চড়ে যাচ্চে— প্রায় প্রলাপের ডিগ্রি পৰ্য্যন্ত এসে বা বা করচে। বয়স তোর যখন অল্প ছিল তখন দেখেচি খুব ঘোরঘনঘটায় ঝগড়া জমিয়ে তুলে বেশি ক্ষণ তার জের রাখতে পারতিস নে। দেখতে দেখতে বাদল কেটে গিয়ে প্রসন্ন হাস্যে আকাশ উদ্ভাসিত হয়ে উঠত। সেই ভরসাতেই তোর চিঠির চড়া সুরে তত বেশি ভয় পাই নি। এখন দেখতে পাচ্চি আবহাওয়া একেবারে বদলে গেছে। দুৰ্যোগ কিছুতে আর মিট্‌তে চায় না। এর কারণ কি এতক্ষণ তাই চিন্তা করছিলুম। আমার নিশ্চয় বোধ হচ্চে আজকাল তুই খুব অতিরিক্ত পরিমাণে আদর পাচ্ছিস্। এটি বীরেনের কীৰ্ত্তি। আমি তাকে বুঝিয়ে বলব তাতে তারও সুবিধা হবেনা, মাঝের থেকে আমাদের উপর পর্যন্ত এর ঝাপটা এসে লাগবে। তোর সাহস ত কম নয়! আমার মত এত বড় লোককেও খোটা দিতে শিখেছিস! এই সেদিন দেখলুম বেণী দুলিয়ে পুতুলখেলায় মেতেছে— আর আজ ! বাসরে, হ্রস্ব দীর্ঘ জ্ঞান নেই, ছোটবড় ভেদ নেই— কি প্রচণ্ড মুখনাড়া! কলকাতায় গিয়ে মোকাবিলায় বোঝাপড়ার চেষ্টা করব ইতিমধ্যে মেজাজটা একটু ঠাণ্ডা করে নে— তার উপায় হচ্চে বীরেনের সঙ্গে খুব ঝগড়া করে একটা দামী রকমের নেকলেস আদায় করে নেওয়া। তার পরে যখন আমার আবির্ভাব হবে তখন মুখের কথা মধুর হয়ে আসবে আর ওষ্ঠাধর একপ্রান্ত থেকে আর একপ্রান্ত হাসিতে ভরে যাবে, কোমল গান্ধীর সুরে অভ্যর্থনা করবি, আসুন আসুন ভানুদাদা— বড় খুসি হলুম। ভানুদাদা ●〉8