পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার কাছে আমার কবিতার ব্যাখ্যা শুনতে এসেছিল, তোমার কথা মনে করে আমি কেবল একটা কবিতা তাদের কাছে ব্যাখ্যা করেছিলুম, সেও জোরে নয়; তারা আর একটা যখন শুনতে চাইলে আমি তাদের কথা শুনলুম না; তাই ত সেদিন আমি শ্রান্ত হইনি। আমি যেমন তোমার কথা শুনেচি, তোমাকেও তেমনি আমার কথা শুনতে হবে। ভাল করে দুধ খেয়ে বিশ্রাম করে আগামী পূজোর ছুটির মধ্যে বেশ মোটা সোটা হয়ে (দিনুবাবুর মত অতটা নয়) আসতে হবে। তোমাকে শ্ৰীমতী রাণু যাতে না বলি এই তোমার ইচ্ছে— কিন্তু আমাকে যদি “প্রিয় রবিবাবু" বলে চিঠি লেখ তাহলে আমি তোমাকে শ্রীমতী রাণু দেবী পর্যন্ত বলতে ছাড়ব না। তুমি আমাকে যদি রবিদাদা বল তাহলে আমার নালিশ থাকবে না। তুমি তোমার এক সন্ন্যাসী দাদাকে বশ করেছিলে, এখন তার পদটা তিনি আমার উপর দিয়ে গেছেন— তোমার সম্ভাষণে তুমি সে কথা যদি বিস্মৃত হও তাহলে চলবে না। তুমি আমাকে বেশ বড় চিঠি লিখেচ, আমিও বড় চিঠি লিখলুম। তোমার কাছে অঙ্কে এবং ভূগোলে আমি পারব না, কিন্তু তাই বলে লেখায় তোমার কাছে যদি হার মানি তাহলে আমার নোবেল প্রাইজ ফিরিয়ে নেবে। আশাকে শাস্তিকে ভক্তিকেশ আমার আশীৰ্ব্বাদ দিয়ো। তোমার বাবজাকে” বোলো তার শরীর কেমন থাকে আমাকে যেন জানান এবং পূজোর ছুটিতে কিম্বা তার পূৰ্ব্বেই আমাকে যেন দর্শন দেন, শুধু একলা নয় সে কথা তাকে না বল্লেও বুঝবেন। তুমি যেমন বৌমার’ উপরে আমার ভার দিয়ে গেছ তেমনি ছুটি পর্যন্ত আমি তোমার মার’ উপর তোমার ভার দিলুম, সেটা তিনি যেন মনে রাখেন; এবার যখন তিনি তোমাকে সঙ্গে নিয়ে আসবেন তখন তোমাকে এবং আমাকে ওজন করে পরীক্ষায় বৌমা প্রথম হন কি তোমার মা প্রথম হন তার বিচার হবে। এই পরীক্ষায় বাংলাদেশের গৌরব বেশি কিম্বা কাশীর গৌরব বেশি আমাদের উভয়ের গুরুত্ব অনুসারে সেইটে স্থির হয়ে যাবে। এত ২৩