পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমাদের দেশে কোনো এক সময়ে গোবৰ্দ্ধনধারী কৃষ্ণ বোধ হয় ছিলেন কৃষির দেবতা, গোয়ালার ঘরে তার বিহার; তার দাদা বলরাম, হলধর। ঐ লাঙল অস্ত্রটা হোলো মানুষের যন্ত্রবলের প্রতীক। কৃষিকে বল দান করেচে যন্ত্র। আজকের দিনে আমাদের কৃষিক্ষেত্রের কোনো কিনারায় বলরামের দেখা নেই— তিনি লজ্জিত— যে দেশে তার অস্ত্রে তেজ আছে সেই সাগরপারে তিনি চলে গেছেন। রাশিয়ার কৃষি বলরামকে ডাক দিয়েচে, দেখতে দেখতে {য] সেখানকার কেদারখণ্ডগুলো অখণ্ড হয়ে উঠল, তার নূতন হলের স্পর্শে অহল্যা ভূমিতে প্রাণসঞ্চার হয়েচে । একটা কথা আমাদের মনে রাখা উচিত, রামেরই হলযন্ত্রধারী রূপ হচ্চে বলরাম – ১৯১৭ খৃষ্টাব্দে এখানে যে বিপ্লব হয়ে গেল তার আগে এদেশে শতকরা ৯৯ জন চাষী আধুনিক হলযন্ত্র চক্ষেও দেখে নি। তারা সেদিন আমাদেরই চাষীদের মতো সম্পূর্ণ দুৰ্ব্বলরাম ছিল, নিরন্ন, নিঃসহায়, নিৰ্ব্বাক। আজ দেখতে দেখতে যি] এদের ক্ষেতে হাজার হাজার হলযন্ত্র নেমেচে । আগে এরা ছিল যাকে আমাদের ভাষায় বলে কৃষ্ণের জীব— আজ এরা হয়েছে বলরামের দল। কিন্তু শুধু যন্ত্রে কোনো কাজ হয় না যন্ত্রী যদি মানুষ হয়ে না ওঠে । এদের ক্ষেতের কৃষি মনের কৃষির সঙ্গে সঙ্গে এগোচ্চে। এখানকার শিক্ষার কাজ সজীব প্রণালীতে। আমি বরাবর বলে এসেচি শিক্ষাকে জীবযাত্রার সঙ্গে মিলিয়ে চালানো উচিত। তার থেকে অবচ্ছিন্ন করে নিলে ওটা ভাণ্ডারের সামগ্ৰী হয় পাকযন্ত্রের খাদ্য হয় না। এখানে এসে দেখলুম এরা শিক্ষাটাকে প্রাণবান করে তুলেচে। তার কারণ এরা সংসারের সীমা থেকে ইস্কুলের সীমাকে সরিয়ে রাখে নি। এরা পাস করবার কিম্বা পণ্ডিত করবার জন্যে শেখায় না— সৰ্ব্বতোভাবে মানুষ করবার জন্যে শেখায়। আমাদের দেশে বিদ্যালয় আছে, কিন্তু বিদ্যার চেয়ে বুদ্ধি বড়ো, সংবাদের চেয়ে শক্তি বড়ো, পুথির পংক্তির বোঝার Worlor