পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগতে অল্পই আছে, পূৰ্ব্বতন কালে আমির ওমরাওরাই সে সমস্ত ভোগ করে এসেচে– তখনকার দিনে যাদের পায়ে ছিল না জুতো, গায়ে ছিল ময়লা ছেড়া কাপড়, আহার ছিল আধপেটা, দেবতা মানুষ সবাইকেই যারা অহোরাত্র ভয় করে করে বেড়িয়েছে, পরিত্রাণের জন্যে পুরুৎপাণ্ডাকে দিয়েচে ঘুষ, আর মনিবের কাছে ধূলোয় মাথা লুটিয়ে আত্মাবমাননা করেচে তাদেরই ভিড়ে থিয়েটারে জায়গা পাওয়া যায় না। আমি যেদিন অভিনয় দেখতে পক্ষে সহজে উপভোগ্য বলে মনে করা যায় না। কিন্তু শ্রোতারা গভীর মনোযোগের সঙ্গে সম্পূর্ণ নিঃশব্দে শুনছিল। এংলো সাক্সন চাষী মজুর শ্রেণীর লোকে এ জিনিষ রাত্রি একটা পৰ্য্যন্ত এমন স্তব্ধ শান্তভাবে উপভোগ করচে এ কথা মনে করা যায় না, আমাদের দেশের কথা ছেড়েই দাও । আর একটা উদাহরণ দিই। মস্কো সহরে আমার ছবির প্রদর্শনী হয়েছিল। এ ছবিগুলো সৃষ্টিছাড়া সে কথা বলা বাহুল্য। শুধু যে বিদেশী তা নয়, বলা চলে যে তারা কোনো দেশাই নয়। কিন্তু লোকের ঠেলাঠেলি ভীড় । অল্প কয় দিনে পাঁচহাজার লোক ছবি দেখেচে । আর যে যা বলুক, অন্তত আমি তো এদের রুচির প্রশংসা না করে থাকতে পারব না। রুচির কথা ছেড়ে দাও, মনে করা যাক এ একটা ফাকা কৌতুহল। কিন্তু কৌতুহল থাকাটাই যে জাগ্রত চিত্তের পরিচয় । মনে আছে একদা আমাদের ইদারা থেকে (জল তোলার জন্যে] একটা বায়ুচলচক্র যন্ত্র এনেছিলুম, তাতে চিত্তের গভীর তলদেশ থেকে একটুও কৌতুহল টেনে তুলতে পারলে না তখন মনে বড়োই ধিক্কার জেগেছিল। এই তো আমাদের ওখানে আছে বৈদ্যুৎ আলোর কারখানা, ক জন ছেলের তাতে একটুও ঔৎসুক্য আছে? অথচ এরা তো ভদ্র শ্রেণীর ছেলে। বুদ্ধির জড়তা যেখানে সেখানে কৌতুহল দুৰ্ব্বল। లి)\e