পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি তার মত গাল রং করি নে বলে আমার সঙ্গে আড়ি করতে যাবে। আমি নিতান্ত ভালোমানুষ, তোমাদের সঙ্গে দুধ খাওয়া নিয়ে ঝগড়া করে আমি কোনোদিন পেরে উঠকনা। বিশেষত তুমি আবার বেশ একটি দলের লোক পেয়েচ। আচ্ছা বৌমাকে জিজ্ঞাসা কোরো দেখি তিনি ক'সের করে দুধ রোজ খেয়ে থাকেন। তিনি যে আমার নামে তোমার কাছে লাগালাগি করেন, তিনি বলুন দেখি, তিনি কি আমাকে রঙীন চিঠির কাগজ আনিয়ে দিয়েচেন ? চুল আঁচড়ানোর নিন্দা করা সহজ কিন্তু নিজে নিজে কি ভাল করে চুল আঁচড়ানো যায় সে কথাটাও ভেবে দেখা উচিত। যাক এই সব সামান্য কথা নিয়ে মাথা গরম করব না। তুমি আমাকে ছবি আঁকা শিখতে বলেচ কিন্তু বৌমা কি সহজে শেখাবেন ? তার নিজের বিদ্যা অত সহজে কি দিয়ে ফেলবেন? তবু তুমি তাকে একবার চিঠিতে অনুরোধ করে দেখো, যদি তোমার কথা শোনেন। দেবল° তোমার সেই মূৰ্ত্তি একটু আরম্ভ করেই মাদ্রাজে চলে গিয়েছিল। বেচারা তাড়াতাড়ি ফিরে এসে দেখে, তার সেই মাটির তালটা পড়ে আছে কিন্তু সজীব মানুষটি কোথায় পালিয়েচে। দেবল ভেবেছিল, তুমি থাকবে, তোমার মূৰ্ত্তি শেষ করে দিয়ে কোনো একটা মন্দিরে তার প্রতিষ্ঠা করবে— এখন হতাশ হয়ে আবার মাদ্রাজে ফিরে যাবার উদ্যোগ করচে — কাল সন্ধ্যাবেলায় এখানে ছোটখাট একটু ঝড়বৃষ্টি হয়ে গেছে। বৃষ্টি যত হয়েচে তার চেয়ে বাতাসের দমকা বেশি প্রবল ছিল। আজ দুপুর বেলা আবার খুব রৌদ্র প্রখর হয়ে উঠেচে। এই একটু আগেই ভাত খেয়ে উঠে এসেচি। এখনো শুতে যাই নি। তোমার বর্ষশেষ কবিতা ভাল লাগে লিখেচ, ওটা আমারো ভাল লাগে— ওটা তুমি সমস্তটা মুখস্ত বলতে পারলে বেশ হবে। সেদিন এখানকার ছেলেরা ছাতে আমার কাছে পুরীতে “সমুদ্রের প্রতি”, আর “জীবনদেবতা" এই দুটো কবিতার মানে বুঝিয়ে নিয়ে গেচে। জীবন দেবতার মানে বোঝাতে অনেকক্ষণ লেগেছিল— ঠিক বুঝেচে কি না জানিনে। ছবি আর একটা や8