পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬ আশ্বিন ১৩৩৭ Williamstown Massachusetts কল্যাণীয়া ভক্তি, তুমি এসেচ আমাদের আশ্রমে, ভারি খুসি হয়েচি। এই সময়ে আমি আছি বহুদূরে, একটুও ভালো লাগচে না। বর্ষার সমারোহ বনে বনে আকাশে আকাশে জমেছিল, কদম্ববন নতুন করে প্রফুল্ল হোলো। কিন্তু আমি নতুন গানের ডালি নিয়ে দাঁড়ালুম না। শারদোৎসবের সময় হয়েছে— শিউলিতলায় সৌন্দর্য্যের সদাব্রত, আকাশে শুভ্রমেঘের আলস্যমন্থরতা, বাতাসে হিমের আভাস, তালবনের শিখরে শিখরে আলোকের পরশপাথর ছুয়ে ছুঁয়ে চলেচে। আমি শারদার কাছে সঙ্গীতের বায়না নিয়ে বসে আছি অথচ আসরে পৌঁছতে পারলুম না। আমার এক বছরের পাৰ্ব্বণী সব বাদ পড়ে গেল। যদি হত পরের চাকরী, তাহলে চাকরী আটলাণ্টিকে ভাসিয়ে দিয়ে চলে যেতেম, কিন্তু নিজের কাজে ছুটি মেলেনা— কড়া মনিব ভিতরে বসে আছে, তার চোখ এড়াব সাধ্য কি। তবুও দিনের পরে দিন যায়— এগিয়ে আসে খালাসের দিন— অবশেষে একদা রাঙা রাত্তার উপর দিয়ে পেছিব শালবনের ছায়া-বীথিকায়। হতভাগা ভিক্ষুকের পথ ক্রমেই যেরকম লম্বা হয়ে চলেচে তাতে বোধ হচ্চে মাঘ মাসের আগে দেশে পৌঁছতে পারব না।’ অর্থাৎ এখনো প্রায় আড়াই মাস আছে। প্রবাসের পঞ্জিকায় আড়াই মাসের ছন্দটা মন্দাক্রান্ত, হতাশ বিরহীর ছদ। এখন শাস্তিনিকেতনের ছুটির দিন, তোমরা কোথায় আছ কে জানে। জনশ্রুতি, তোমার বাবা চলেচেন চীনের মুলুকে। টিকতে পারবেন কী করে বুঝতে পারচিনে। এই 8○○